গাজা যুদ্ধে সামরিক লক্ষ্য অর্জনে ইসরায়েল ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হামাসের সিনিয়র নেতা খলিল আল-হাইয়া।
বুধবার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পর্কে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাস প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেওয়া খলিল। খবর বিবিসির।
খলিল আল-হাইয়া বলেন, যুদ্ধে গাজাবাসীর দুর্ভোগের জন্য ইসরাইলকে ক্ষমা করবে না হামাস।
তিনি বলেন, গাজার ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে, প্রতিটি রক্তের ফোঁটা এবং প্রতিটি অশ্রু বেদনা ও নিপীড়নের জন্য বলছি, আমরা ভুলব না এবং ক্ষমা করব না।
ইসরায়েলি বাহিনী গাজা ভূখণ্ডে তাদের সামরিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মনে করেন হামাসের এই সিনিয়র নেতা।
এদিকে, যুদ্ধবিরতিতে হামাসের সব শর্ত পূরণ হয়েছে বলে দাবি করেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জত আল-রিশেক।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, যুদ্ধের শুরুতে হামাস যে সমস্ত শর্ত নির্ধারণ করেছিল, তা পূরণ করেই চুক্তি হয়েছে। শর্তগুলো ছিল ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, বাস্তুচ্যুতদের বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া এবং গাজায় যুদ্ধের স্থায়ী অবসান।
যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের ব্যাপারটিকে ফিলিস্তিনি লোকদের ধৈর্যের ফল হিসেবে উল্লেখ করেছে হামাস। সংগঠনটি বলছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি আমাদের মহান ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচল ধৈর্য এবং গাজা উপত্যকায় ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে আমাদের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের ফল। এটা আমাদের জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করেছে।
যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে মধ্যস্থতা করছে তিনটি দেশ কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি দোহায়।
তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির যে চুক্তি হয়েছে তা ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস, যাদের মধ্যে সব নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা রয়েছেন।
গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরাইলের সঙ্গে গাজার সীমান্তের ৭০০ মিটারের (২,২৯৭ ফুট) বেশি দূরে অবস্থিত এলাকায় ইসরায়েল তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করবে।
ইসরাইল বেসামরিক নাগরিকদের গাজার উত্তরে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে দেবে এবং প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক পর্যন্ত ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেবে।
শর্ত পূরণ হলে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে অবশিষ্ট সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে।
তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট মরদেহগুলোর ফেরত দেওয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এর তত্ত্বাবধানে থাকবে মিশর, কাতার ও জাতিসংঘ।