গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু যুক্তরাষ্ট্রের

0

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে। মে মাসেই সেখান থেকে মানবিক সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের কারণে স্থলপথে গাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাঠানোর কাজ অত্যন্ত কঠিন। তাই মানবিক সাহায্য পাঠাতে মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলের কাছে সমুদ্রের উপর অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে। আগামী মে মাসেই সেটি প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কথা। 

মার্কিন সেনাবাহিনীর তৈরি অস্থায়ী বন্দর গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জন্য বাস্তবে কত পরিমাণ ত্রাণ পাঠাতে সাহায্য করবে এবং সেই সহায়তা স্থলপথে কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে গাজার উত্তরে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বেড়ে চলায় জরুরি সহায়তার প্রয়োজনের কথা বলছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, অস্থায়ী বন্দরে পাঠানো মানবিক সাহায্য ইসরায়েলি চেকপোস্টের অনুমোদনের পর গাজার অভ্যন্তরে পাঠানো যাবে। হামাসের যোদ্ধাদের কাছে কোনো ধরনের ত্রাণ যাতে না পৌঁছায়, ইসরায়েল তা নিশ্চিত করতে চায়। জাতিসংঘের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও ইসরায়েল গোটা প্রক্রিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায়।

জাতিসংঘের সূত্র অনুযায়ী, ইসরায়েলি চেকপয়েন্টে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর কাজ বর্তমান সংকটের শুরু থেকেই বেশ কঠিন ছিল। এমনকি সাইপ্রাসের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ সেই ত্রাণ সহায়তা পরীক্ষা করার পরেও সেই বিলম্ব এড়ানো যাচ্ছে না। অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শেষ হলে প্রথম পর্যায়ে দিতে ৯০টি ট্রাক সেখান থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারবে। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে ১৫০ ট্রাক সেই বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে। ইসরায়েলি চেকপোস্টের উপর ট্রাক চলাচলের গতি অনেকটাই নির্ভর করবে। 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সেখানে নিরাপত্তা ও লজিস্টিক্স ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে। মার্কিন সৈন্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কয়েক হাজার সৈন্যের এক বিশেষ ব্রিগেড সক্রিয় রয়েছে। উল্লেখ্য, নির্মীয়মান অস্থায়ী বন্দরের কাছাকাছি বুধবার মর্টার হামলা ঘটেছে।

অস্থায়ী বন্দরের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নে মানবিক সাহায্য পাঠানো সম্ভব হলেও রাফায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ঘোষিত অভিযানের কারণে গাজার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ত্রাণ বণ্টনের কাজ আরও বিপজ্জনক ও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বদ্ধপরিকর। সেই অভিযান শুরু হলে গাজার উত্তরের পর দক্ষিণ অংশেও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি আশঙ্কা করছে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে ও সিএনএন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here