যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে অবনতির মুখে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আটটি ইউরোপীয় রাষ্ট্রসহ দশটি দেশ। এমন পরিস্থিতি সংকট নিরসনে ইসরায়েলের প্রতি সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যসহ দেশগুলো।।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের জারি করা এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এই আহ্বান জানান। বিবৃতিতে ব্রিটেন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, জাপান, নরওয়ে, সুইডেন এবং সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গাজা উপত্যকার পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর বলে বর্ণনা করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, শীত মৌসুম শুরু হওয়ায় ভারী বৃষ্টি ও তাপমাত্রা কমে যাওয়ার মধ্যে গাজার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছে। এখনও প্রায় ১৩ লাখ মানুষের জরুরি আশ্রয়ের প্রয়োজন রয়েছে। একই সঙ্গে অর্ধেকের বেশি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র আংশিকভাবে চালু রয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আরও জানান, স্যানিটেশন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার মানুষ দূষিত পানিতে প্লাবনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া গাজার মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ, আনুমানিক ১৬ লাখ মানুষ, তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে।
এদিকে ইসরায়েল গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে কাজ করা ৩৭টি ত্রাণ সংস্থার লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন নিবন্ধন বিধিমালা পূরণ না করার অভিযোগে এসব সংস্থার কার্যক্রম আগামী ১ জানুয়ারি থেকে স্থগিত করা হবে এবং ৬০ দিনের মধ্যে তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তালিকায় অ্যাকশনএইড, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি ও নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাও রয়েছে।
গাজার জনসংখ্যার বেশিরভাগই এখন তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হচ্ছে। ত্রাণ তৎপরতা ‘অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে চলমান বাধার কারণে উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। কর্মকর্তারা গাজার মানবিক সংকট মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, জোর দিয়ে বলেছেন, আন্তর্জাতিক এনজিওগুলিকে পূর্বাভাস অনুসারে কাজ করার অনুমতি দিতে হবে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকে পূর্বানুমেয় ও নির্বিঘ্নভাবে কাজ করতে দিতে হবে। ত্রাণ প্রবেশে বাধা অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য জরুরি সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে বলে সতর্ক করেন তারা।এছাড়া জাতিসংঘ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো, বিশেষ করে ইউএনআরডব্লিউএকে নিরপেক্ষভাবে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

