গাইবান্ধায় সংরক্ষণের বাইরে ১ লাখ মেট্রিক টনের বেশি আলু

0

চলতি বছর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আলু বাম্পার ফলন হয়েছে। কোল্ড স্টোরে বুকিং স্লিপ শেষ হওয়ায় আলু সংরক্ষণ সংকটে উদ্বিগ্ন আলু চাষিরা। গত বছর গুলোর তুলনায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ করে কৃষকরা। কিন্তু উপজেলার ৪টি স্টোরেই আলু সংরক্ষণের কার্ড না পেয়ে রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে বস্তাভর্তি গাড়ি। এতে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি বিভাগের ধারণা গড় ফলন অনুযায়ী এবার ১লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি আলু হিমাগারে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কৃষকের ঘরে থাকতে পারে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬ হাজার ১০৪ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৩১৮ হেক্টরের অধিক জমিতে। ফলন অনুযায়ী আবাদকৃত জমি থেকে পাওয়া যাবে ২ লাখ ৪ হাজার ৯৯৬ টন আলু। পক্ষান্তরে উপজেলায় আলু সংরক্ষণের জন্য ৪টি হিমাগারে ৩৬ হাজার ৫০০ টন আলু সংরক্ষণ করা যাবে। সে অনুযায়ী চাষিদের উৎপাদিত ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪৯৬ মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণের বাইরে থেকে যাচ্ছে।

এদিকে মাঠের আলু উত্তোলন হওয়ায় এবং অতিরিক্ত আলু আবাদের কারণে কৃষকরা হিমাগার থেকে আলু সংরক্ষণের কার্ড সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখতে পায় কোন কোন হিমাগারের কার্ড শেষ হয়ে গেছে। এতে করে আলু চাষিরা তাদের উৎপাদিত আলুু নিয়ে হতাশায় পরেছেন। অধিকাংশ কৃষকের দাবি, হিমাগার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজশে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ী, মজুতকারীরা আলু সংরক্ষণের স্লিপ আগেই সংগ্রহ করেছে। ফলে সাধারণ চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছে।

উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের গোশাইপুর গ্রামের আলু চাষি তবিবর রহমান বলেন, আলু সংরক্ষণের কার্ডের জন্য ৩ দিন হিমাগারে গিয়েছি। স্লিপ না পেয়ে ফিরে এসেছি। একই ধরণের অভিযোগ সাপামারা ইউনিয়নের বাবলু, মোজাম, সোরাফ, রুবেল মিয়ার। তারা বলেন ষ্টোরের লোকজন চাষিদের নয়, মজুতদার ও ব্যবসায়ীদের কাছে আলু রাখার স্লিপ আগেই  প্রদান করেছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষকরা আলুু রাখার সুযোগ পাবেনা। আলু সংরক্ষণ করতে না পারলে নিশ্চিত ক্ষতির মুখে পড়বে।

গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার সজিব বলেন, এবছর আমরা স্থানীয় কৃষকদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি। মজুতদারদের কোন কার্ড দিচ্ছি না। কৃষকেরা ৫ থেকে ১০ বস্তা করে আলু নিয়ে আসলে কোল্ড স্টোরেজে রাখার কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের দু’টি স্টোরের ধারণ ক্ষমতা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ বস্তা। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার বস্তা আলু বুকিং হয়েছে।

আলু সংরক্ষণের ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, অধিক আলু উৎপাদনের কারণে কিছু আলু স্টোরের বাইরে থাকতে পারে। তবে কৃষকদের বীজ আলু সংরক্ষণের ব্যাপারে আমাদের জানালে আমরা আলু রাখায় সহায়তা করবো। এ ছাড়াও অতিরিক্তি আলু প্রাকৃতিক  উপায়ে সংরক্ষণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকরা কম পক্ষে তিনমাস পর্যন্ত আলু সংরক্ষণ করতে পারবে।  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here