সময় বদলেছে। বদলেছে প্রযুক্তি। গতি বাড়াতে মানব সভ্যতা ছুটছে যন্ত্রের পেছনে। কৃষি ক্ষেত্রও পিছিয়ে নেই। এই খাতেও একের পর এক যুক্ত হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি।
আর সেই পালাবদলের পালে হাওয়া দিয়ে হালের গরু আর লাঙল-মইয়ের জায়গা দখল করেছে আধুনিক প্রযুক্তির চাষাবাদ যন্ত্র। এখন যন্ত্রে বাস, যন্ত্রে চাষ, যন্ত্রেই রোপণ; আবার যন্ত্রে কর্তন।
রংপুরের বদরগঞ্জে গরুর গাড়ির চাকা ও চাষের হালের জন্য বিখ্যাত হাটও ছিল। সেই হাট একসময় মুখর থাকত কৃষি কাজে যুক্ত মানুষের পদচারণায়। এখন সেসব অতীত। সেই হাটও নেই। নেই সেই হালও।
পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের প্রবীণ চাষি নজরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন গরু ছাড়া হালচাষের কথা চিন্তাই করা যেত না। এখন গরুর দাম বেশি এবং ট্রাক্টর যন্ত্রের সাহায্যে চাষ করায় সময় ও খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা আর গরু দিয়ে জমি চাষ করেন না। তবে ঐতিহ্য হিসেবে কেউ কেউ ধরে রেখেছেন গরু দিয়ে জমি চাষের বিষয়টি। আবার অনেকে হাল এবং মই পুরনো দিনের স্মৃতি হিসেবে বাড়ির আঙিনায় রেখে দিয়েছেন।’
কৃষিবিদদের মতে গ্রাম বাংলা থেকে গরুর হাল ও মই বিলুপ্তির প্রধান কারণ হলো আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার। প্রযুক্তি এখন সহজ লভ্য হওয়ায় কেউ সময়, পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় করছে না গরুর হালে। এছাড়া গরুর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আগের মত ঘরে ঘরে গরু পালনের বিষয়টিও কমে গেছে।
এক সময় চাষ দেয়ার জন্য নির্দিষ্ট গরু পালন করা হত কৃষকের ঘরে ঘরে। গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে সময়ে পথ পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে কৃষি কাজে গরুর ব্যবহার। যারা এখন গরু লালন-পালন করছেন, তারা বাণিজ্যিক চিন্তা-ভাবনা থেকেই করছেন। তাই গরুকে বিকল্প অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না। অর্থাৎ গরুকে এখন আর কৃৃষি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না।