গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, ‘সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক দলের প্রভাব। রাজনৈতিক দলের ভয়ভীতি প্রদর্শন, ক্ষমতার দাপট দেখানো ও ব্যবসায়ী স্বার্থের প্রভাবও রয়েছে।’
সোমবার দুপুরে বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বরিশাল বিভাগের সাংবাদিকদের সঙ্গে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কামাল আহমেদ বলেন, ‘গণমাধ্যমের দায়িত্ব হচ্ছে সবার মত তুলে ধরা। সবার চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো। শুধু এক পক্ষের বক্তব্য প্রচার করা নয়। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ী হস্তক্ষেপ আছে। যেসব ঋণ খেলাপিরা মিডিয়ার মালিক তার গণমাধ্যমে তার বিষয়টি প্রকাশ করে না।’
তিনি বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করার জন্য এ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশনের প্রধান লক্ষ্য থাকবে সংবাদ এবং সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।’
কমিশন প্রধান আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে একই মিডিয়া হাউসকে টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল, প্রিন্ট ভার্সন বা অনলাইন রেডিওর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে একই খবর ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এতে পাঠক ভিন্ন কোনও মত বা বৈচিত্র্যতা পাচ্ছেন না। এগুলোর সমাধান আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
সভায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার দেড় শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত থেকে একগুচ্ছ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পাশাপাশি জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, প্রভাবশালীদের হাত থেকে সংবাদমাধ্যমকে মুক্ত রাখা, সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, পত্রিকায় সম্পাদক হিসেবে যোগদান করতে হলে সাংবাদিকতায় কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা, মফস্বল সাংবাদিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান, সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের জন্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান গঠনসহ সাংবাদিকদের একক রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদানের প্রস্তাব করা হয়।
গণমাধ্যমকর্মীরা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়েবসাইটে তাদের মতামত বা সুপারিশ কমিশনের কাছে পৌঁছাতে পারবেন।
সভায় কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, বেগম কামরুন্নেসা হাসান, জিমি আমির, টিটু দত্ত গুপ্ত, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আঞ্চলিক তথ্য অফিস বরিশালের উপপ্রধান তথ্য অফিসার আফরোজা নাইচ রিমাসহ বিভাগের অন্য জেলার তথ্য অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।