খাদ্য সংকটে লাখো বাংলাদেশিসহ ৪ কোটি আমেরিকান!

0
খাদ্য সংকটে লাখো বাংলাদেশিসহ ৪ কোটি আমেরিকান!

যুক্তরাষ্ট্রে টানা ৪০ দিন ধরে চলা কেন্দ্রীয় সরকারের শাটডাউন (অচলাবস্থা) শেষ করার লক্ষ্যে রোববার রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সিনেটরদের মধ্যে সমঝোতা হলেও, নিম্ন আয়ের আমেরিকানদের খাদ্য ভর্তুকি (ফুডস্ট্যাম্প) নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলেও তৈরি হয়েছে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা।

নতুন অর্থবছরের শুরু ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই শাটডাউন এখন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ। সরকারি ব্যয়সংক্রান্ত বিল পাশ না হওয়ায় ফেডারেল সরকারের বেশিরভাগ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। ওবামা প্রশাসনের সময় চালু হওয়া ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ (ওবামা কেয়ার) সম্প্রসারণ নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মতপার্থক্যের কারণেই এ অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

৩১ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যসেবায় সরকারি ভর্তুকির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এটি সম্প্রসারণ না হলে নিম্ন ও মধ্য আয়ের নাগরিকদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে ডেমোক্র্যাটরা দাবি করে আসছেন।

রোববার রাতে সিনেটে ৬০-৪০ ভোটে শাটডাউন অবসান সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস হয়। তবে বিলটি কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে পাশ হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের পরই কার্যকর হবে। ফলে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ৪২ মিলিয়ন (৪ কোটির বেশি) নিম্ন আয়ের আমেরিকান এবং কয়েক লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী খাদ্য সহায়তার অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। ফেডারেল বরাদ্দ সংকুচিত হওয়ায় ৭ নভেম্বর থেকে ৪০টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা ৪ শতাংশ কমেছে। ফেডারেল এভিয়েশন এজেন্সির (FAA) তথ্য অনুযায়ী, রোববার পর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল এবং প্রায় ১০ হাজার ফ্লাইটের সময়সূচি বিপর্যস্ত হয়েছে।

ফুডস্ট্যাম্প বরাদ্দ বন্ধ থাকায় গ্রোসারি স্টোর ও রেস্টুরেন্টে বিক্রি কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। এতে বাংলাদেশি-অধ্যুষিত বাণিজ্যিক এলাকায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।

নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান, টেক্সাসসহ বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি জোরদার করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডেমোক্র্যাট সিনেটর ম্যাগি হাসান ও জন শাহীন এবং মেইনের স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাংগাস কিংয়ের মধ্যস্থতায় হওয়া সমঝোতা সফল হলে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি দপ্তরগুলোর জন্য অর্থ ছাড় দেওয়া হবে।

রিপাবলিকান সিনেটর সুসান কলিনস জানিয়েছেন, “শাটডাউন চলাকালে বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের চাকরি ফেরানো হবে এবং সামরিক বাহিনী, কোস্ট গার্ড, ক্যাপিটল পুলিশ, সীমান্তরক্ষী ও বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রকসহ সব ফেডারেল কর্মী তাদের বকেয়া বেতন পাবেন।”

তবে সিনেটে ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শ্যুমার এবং প্রতিনিধি পরিষদের বড় একটি অংশ এখনো সমঝোতায় রাজি না হওয়ায় শাটডাউন পুরোপুরি অবসান হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here