খাদ্যের উচ্চমূল্যে দুর্ভোগে ৭১ শতাংশ পরিবার

0

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সারা দেশে ২৪ শতাংশ পরিবারে খাদ্যনিরাপত্তার অবনতি ঘটেছে। এ নিরাপত্তাহীনতায় বড় ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-এর চলমান খাদ্যনিরাপত্তা প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এ উদ্বেগ তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের ৭১ শতাংশ পরিবার দুর্ভোগে পড়েছে।

গত মে থেকে আগস্টের খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে ডব্লিউএফপি। প্রতিবেদনটির কপি সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরেও পাঠানো হয়েছে।

সরকারের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে খাদ্যনিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের মানুষের ওপর করা একটি জরিপের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই জরিপে বলা হয়েছে : ১. উচ্চ খাদ্যমূল্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব এবং আয় কমে যাওয়া বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় অভিঘাত তৈরি করেছে। ২. অন্তত ৭১ শতাংশ পরিবার বলেছে খাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। শুধু তাই নয়, এটি তাদের যাপিত জীবনে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে। ৩. প্রতি ১০ পরিবারের মধ্যে সাতটির বেশি পরিবার বলেছে জীবনধারণের জন্য তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। কেউ ধার করছে, কেউ সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে, কেউবা আবার ঋণ করে খাদ্য কিনছে; গড়ে প্রতি ১০ পরিবারের মধ্যে তিনটি (প্রায় এক-তৃতীয়াংশ) খাবার কেনার সামর্থ্য হারিয়েছে। দুর্যোগপ্রবণ ও নিম্ন আয়ের অঞ্চলে প্রায় অর্ধেক (প্রতি ১০টির মধ্যে পাঁচটি) পরিবার এ ধরনের সামর্থ্যহীনতার কথা বলেছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ে ডব্লিউএফপি যে সিভিল-সার্ভে রিপোর্টটি করেছে, বাস্তবতার নিরিখে এর যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। খাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে বাংলাদেশের মানুষ যে শুধু কষ্টে আছে তাই নয়, অনেক পরিবার খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। এতে পুষ্টির অভাব দেখা দিচ্ছে। এ ধরনের পুষ্টিহীনতা শিশুদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা তৈরি করছে। উচ্চমূল্যের অভিঘাত মোকাবিলায় যদিও সরকার কিছু নিরাপত্তা কর্মসূচি নিয়েছে। ১ কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্য দিচ্ছে। এ ধরনের কর্মসূচি আরও সম্প্রসারণ করা উচিত। বিশেষ করে শহর ও শহরতলিতে যেসব এলকায় নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের বসবাস, সেখানে এসব কর্মসূচি বাড়ানো দরকার।’

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here