সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে আইপিএলের প্লে-অফ খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
রবিবার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ক্যামেরুন গ্রিনের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে রোহিত শর্মার মুম্বাই। ম্যাচে ২ পয়েন্ট পেলেও রোহিত শর্মারা নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না। তাদের তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুর এবং গুজরাট টাইটান্স ম্যাচের দিকে।
টস জিতে মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যাট করা সুযোগ পেয়ে লড়াই করার মতো রান তোলে হায়দরাবাদ। মার্করামদের ইনিংস শেষ হয় ৫ উইকেটে ২০০ রানে। জবাবে ১৮ ওভারে ২ উইকেটে ২০১ রান তুলল মুম্বাই।
জয়ের জন্য ২০১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী মেজাজে শুরু করেন মুম্বাইয়ের ব্যাটাররা। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ জয় ছাড়াও রোহিতদের লক্ষ্য ছিল নেট রান রেট উন্নত করা। ১১.৫ ওভারের মধ্যে জয়ের রান তুলতে পারলে নেট রান রেটে নিরিখে আরসিবিকে টপকে যেতে পারতেন রোহিতরা। তা না পারায় তাদের তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে বিরাট কোহলিদের সঙ্গে হার্দিকদের লড়াইয়ের দিকে। কারণ কোহলিরা জিতলেই আইপিএলের লড়াই থেকে ছিটকে যাবে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
মুম্বাইয়ের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন ক্যামেরন গ্রিন এবং রোহিত। বেশ কয়েকটি ম্যাচ পর আবার চেনা মেজাজে দেখা গেল মুম্বাই অধিনায়ককে। ওপেন করতে নেমে করলেন ৩৭ বলে ৫৬ রান। ৮টি চার এবং ১টি ছক্কা দিয়ে সাজালেন নিজের ইনিংস। অন্য ওপেনার ঈশান কিশন (১৪) অবশ্য রান পেলেন না। তাতে মুম্বাইয়ের বিশেষ সমস্যা হয়নি। কারণ রোহিতের সঙ্গে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে গেলেন গ্রিন। অনবদ্য শতরান করলেন অসি ক্রিকেটার। তার ব্যাট থেকে এলো ৪৭ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস। গ্রিনের শতরান পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে গেল মুম্বাই।
গ্রিন দাপুটে ইনিংসটি খেললেন ৮টি চার এবং ৮টি ছয়ের সাহায্যে। সহজ জয় এনে দিলেও দলকে নিশ্চিন্তে রাখতে পারলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত তার সঙ্গে ২২ গজে ছিলেন সূর্যকুমার যাদব। তিনি করলেন ১৬ বলে ২৫ রান। ৪টি বাউন্ডারি মারলেন সূর্যকুমার।
হায়দরাবাদের বোলাররা রোহিত এবং গ্রিনের আগ্রাসী ব্যাটিং থামাতে ব্যর্থ হলেন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। মার্করামের দলের সফলতম বোলার ভুবনেশ্বর কুমার। তিনি ২৬ রানে ১ উইকেট নিলেন। ৩৭ রানে ১ উইকেট মায়ঙ্ক ডাগার। উমরান মালিক শেষ ম্যাচেও নজর কাড়তে পারলেন না। ৩ ওভারে খরচ করলেন ৪১ রান।
নিয়মরক্ষার ম্যাচেও নিজেদের সে ভাবে মেলে ধরতে পারলেন না হায়দরাবাদের অধিকাংশ ক্রিকেটার। দুই ওপেনার বিভ্রান্ত শর্মা এবং মায়াঙ্ক আগরওয়াল শুরু করেন আগ্রাসী মেজাজে। প্রথম উইকেটের জুটিতে তারা তোলেন ১৪০ রান। বিভ্রান্তের ব্যাট থেকে এল ৪৭ বলে ৬৯ রান। ৯টি চার এবং ২টি ছয় মারলেন তিনি। ২২ গজের অন্য প্রান্তে মায়াঙ্ক খেললেন ৪৬ বলে ৮৩ রানের ইনিংস। মুম্বাইয়ের কোনও বোলারকেই রেয়াত করেননি তিনি। ৮টি চার এবং ৪টি ছক্কা দিয়ে নিজের ইনিংসটি সাজালেন তিনি।
হায়দরাবাদের প্রথম দুই ব্যাটার ছাড়া বাকিরা অবশ্য তেমন রান পেলেন না। ফলে প্রত্যাশিত রান তুলতে পারল না হায়দরাবাদ। তিন নম্বরে নেমে হেনরিক ক্লাসেন করলেন ১৩ বলে ১৮। ব্যর্থ গ্লেন ফিলিপস (১), হ্যারি ব্রুকরা (শূন্য)। শেষ দিকে পর পর উইকেট হারানোয় হায়দরাবাদের রান তোলার গতি কমে গেল। এক সময় মনে হচ্ছিল ২১০ থেকে ২২০ রান করবে হায়দরাবাদ। কিন্তু মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় হায়দরাবাদের ইনিংস থামল ২০০ রানে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন মার্করাম (১৩) এবং সমবীর সিংহ (৪)।
মুম্বাইয়ের সফলতম বোলার আকাশ মাধওয়াল। ৩৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। মূলত তার দাপটে হায়দরাবাদের রান প্রত্যাশিত জায়গায় পৌঁছতে পারল না। ৪২ রানে ১ উইকেট ক্রিস জর্ডনের।