একে বিস্ময়কর ঘটনাই বলা যায়। অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর দশায় থাকা যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের মুদ্রা ‘আফগানি’ই চলতি প্রান্তিকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রার র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে আসা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সুবাদে আফগানির এমন উত্থান ঘটেছে।
ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এ ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন শাসক গোষ্ঠীর কিছু উদ্যোগও বেশ কাজে দিয়েছে। তারা ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় লেনদেনে ডলার ও পাকিস্তানি রুপির ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। সেই সাথে দেশের বাইরে থেকে মার্কিন ডলার আনার ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করে। পাশাপাশি তালেবান অনলাইন বাণিজ্যও অবৈধ ঘোষণা করেছে। এসব আইন না মানলে কারাদণ্ডের হুমকি দিয়েছে তালেবান সরকার।
এ নিয়ে চলতি বছর আফগানির মান ১৪ শতাংশ বাড়ল। সেই হিসাবে এ বছর কলম্বিয়া ও শ্রীলঙ্কার পরই বিশ্বের তৃতীয় সেরা মুদ্রা হচ্ছে আফগানি।
ওয়াশিংটনের নিউ লাইনস ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কামরান বোখারি বলেন, ‘মুদ্রার কঠোর নিয়ন্ত্রণ কাজে দিয়েছে। তবে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে এটি বেশিদিন টিকবে না। এ কারণে পরে আরও সংকটে পড়তে হবে দেশটিকে।’
আফগানিস্তানে এখন বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের বড় একটি অংশই হয় মানি চেঞ্জারের মাধ্যমে। স্থানীয়ভাবে এদের বলা হয় সারাফ। এসব চেঞ্জার বিভিন্ন বাজারে স্টল খোলে অথবা শহর ও গ্রামের দোকান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসব মানি চেঞ্জারে প্রতিদিন মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার হাতবদল হয়। এ বাণিজ্যে কোনো সীমা নেই।
আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কারণে আফগানিস্তানে এখন প্রায় সব রেমিট্যান্সই শতাব্দীপ্রাচীন হাওয়ালার (হুন্ডি) মাধ্যমে পাঠানো হয়। সারাফগুলোর ব্যবসার মূল অনুষঙ্গই হচ্ছে হাওয়ালা।
মুদ্রা শক্তিশালী হলে তেল, বিশেষ করে অপরিশোধিত তেলসহ অন্যান্য জরুরি পণ্য আমদানির চাপ কমতে পারে আফগানিস্তানের ওপর।
সূত্র: ব্লমবার্গ