ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কোটি টাকা বাণিজ্যে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মফিজুল হককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিভিন্ন মামলায় বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে পাইলট স্কুলসহ গোটা উপজেলায় একক কর্তৃত্ব চালিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যসহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন মফিজুল। তার একচ্ছত্র আধিপত্য ও বেপরোয়া দুর্নীতিতে অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ ছিলেন।
পীরগঞ্জ পৌর যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বরত অবস্থায় ২০০৯ সালের শেষের দিকে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মফিজুল হক। অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকার পরও সে সময় স্কুলের সভাপতি আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইমদাদুল হক বিশেষ সুবিধা নিয়ে দলীয় বিবেচনায় তাকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন।
প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই স্কুলটিকে অনিয়ম-দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেন মফিজুল হক। উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নিয়ে সাবেক এমপি ইমদাদুল হককে হাত করে নানা অনিয়ম, স্কুলের আয়ের টাকা স্কুলের ফান্ডে জমা না করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।
এছাড়া স্কুলের ফলজ ও বনজ গাছ, ২০২৩ সালে মসজিদ সংলগ্ন নিম, কড়ই, মেহগনি গাছ বিক্রি করে সে টাকাও আত্মসাৎ করেন। দুর্নীতির টাকায় ৪টি বাড়ি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
২০০০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নকল জাল রেজুলেশন ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হকের জাল স্বাক্ষর করে একটি ভুয়া কমিটি করেন। এই সময়ে ২ কোটি ৩৭ লাখ ২৭ হাজার ৬৯১ টাকা আত্মসাৎ করেন। যার খরচ দেখানো হয় মসজিদ নির্মাণের ছাদ ঢালাইয়ের নামে। অথচ বাস্তবে তার হদিস মেলেনি। স্কুলের রেজুলেশন বইসহ আয়-ব্যয়ের সকল হিসাব খাতা নিয়ে পলাতক ছিলেন তিনি।
পীরগঞ্জ থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোসহ হামলা ও মারধরের মামলা এবং স্কুলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধান শিক্ষক ও আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল