টানা দ্বিতীয় বছরের মতো ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে কানাডা। আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য সরকারি পরিষেবার ওপর চাপ কমাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
শুক্রবার কানাডার অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চলতি বছরে ৪ লাখ ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য স্টাডি পারমিট ইস্যু করা হবে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ১০ শতাংশ কম।
গত কয়েক বছরে বিপুলসংখ্যক অভিবাসী ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর আগমনে দেশটিতে তীব্র আবাসন সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে কানাডা সরকার ২০২৪ সাল থেকেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে কানাডায় সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী স্টাডি পারমিট পেয়েছিলেন। এর ফলে দেশটিতে সক্রিয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখে পৌঁছে যায়। ২০১২ সালে যেখানে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২ লাখ ৭৫ হাজার।
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে কানাডা পড়াশোনার জন্য শীর্ষ পছন্দের দেশ। তবে অতিরিক্ত অভিবাসনের কারণে সৃষ্ট আবাসন ও পরিষেবা সংকট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি।
নতুন শর্তাবলি
বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সীমিত করতে কানাডা সরকার নতুন নিয়ম চালু করেছে। এখন থেকে স্টাডি পারমিটের জন্য আবেদনকারীদের কানাডার কোনও একটি প্রাদেশিক বা টেরিটোরিয়াল প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। মাস্টার্স ও পোস্ট-ডক্টরাল পর্যায়ের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
জনমত ও রাজনৈতিক প্রভাব
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সম্প্রতি অভিবাসনের হার কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও আগামী মার্চে তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন, তার নেওয়া নীতিমালার প্রভাব ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন জরিপে নতুন অভিবাসীদের প্রতি জনসমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
কানাডার সুখ্যাতি থাকা সত্ত্বেও আবাসন ব্যয় এবং পরিষেবার ওপর চাপ বাড়ার ফলে দেশটির সরকার অভিবাসন নীতিতে কঠোর হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে কানাডার সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল, তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সরকারের মতে, এই উদ্যোগ অভিবাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে এবং কানাডার পরিষেবাগুলোকে আরও দক্ষ করে তুলবে।
সূত্র: রয়টার্স