কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় প্রতি মৌসুমে ২৫ কোটি টাকার বেশি সবজি চারা বিক্রি হয়। এ চারা জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। এর সাথে জড়িত রয়েছে ৫ শতাধিক কৃষক। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আছেন ৫ হাজার মানুষ। প্রায় ৫০ বছর ধরে এই ব্যবসা চলছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার ডাকলাপাড়া, কালাকচুয়া, সমেশপুর, কাবিলা, নিমসার, চান্দিনা উপজেলা, দেবিদ্বার উপজেলা, বরুড়া ও সদর দক্ষিণ উপজেলায় এই চারার চাষ হচ্ছে। জুন থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চারা চাষ ও বিক্রি করা হয়। এখানের চারা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বাজারে নিয়ে কোন চারা বিক্রি করেন না। অধিকাংশ ক্রেতা জমিতে এসে নিয়ে যান। কেউ কেউ অর্ডার করলে বাসে তুলে দেন। চারার মান ভালো হওয়ায় সারা দেশে এই এলাকার চারার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, বাঁধা কপি, টমেটো, বেগুন, লাউ, কমুড়া, ব্রোকলিসহ ২৫ রকম চারা।
আবদুর রবসহ কয়েকজন কৃষক জানান, প্রথমে বুড়িচংয়ের ডাকলাপাড়ায় এই চারা উৎপাদন শুরু হয়। পরে তা অন্য গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। বীজ ও সারের দাম বাড়ায় লাভ কম হচ্ছে। ৪ বছর আগে এক কেজি ফুলকপির বীজ ছিল ৭৫ হাজার টাকা, বর্তমানে তা ৯৬ হাজার টাকা।
কামাল হোসেন নামে ফেনী থেকে এক ক্রেতা বলেন, বুড়িচং থেকে আমরা প্রতি বছর চারা নিয়ে যাই। এখানের চারার মান বেশ ভালো, দামেও সাশ্রয়ী।
উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিণা আক্তার বলেন, জেলার সবচেয়ে বেশি চারা উৎপাদন হয় বুড়িচংয়ে। উপজেলার সমেশপুরে বেশি চারা উৎপাদন হয়। এখানের অর্থনীতিতে চারা উৎপাদন ভালো ভূমিকা রাখছে। তাদের আমরা কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, জেলার ১১৪ হেক্টর জমিতে সবজির চারা উৎপাদন হয়। ৮ মাস কয়েক ধাপে এখানে চারা উৎপাদন হয়ে থাকে। আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের আরো দক্ষ করে তুলবো।