ঐচারচর। ব্যতিক্রম বানানের একটি গ্রাম। তেমনি ব্যতিক্রম আবাদে নেমেছেন ওই গ্রামের কৃষকরা। চৈত্র বৈশাখ মাসে সাধারণত তরমুজ বাঙ্গির মৌসুম। কিন্তু এখন শীতেও মিলতে বাঙ্গি। কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের ঐচারচর গ্রামে কৃষকরা আগাম বাঙ্গি চাষ করেছেন।
আগাম চাষে তারা কয়েকগুণও বেশি লাভ পাচ্ছেন। অন্য ফসলে তারা লোকসান করলেও ফাটা বাঙ্গি তাদের কপাল জুড়ে দিচ্ছে। ভালো লাভ পেয়ে খুশি তারা। আগামীতে আরো বেশি জমিতে কৃষকরা আগাম বাঙ্গি চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,তিতাস নদীর শাখা খালের পাশে বিস্তীর্ণ মাঠ। সেই মাঠে কুমড়ো,সরিষা,শসাসহ নানা ফসল। তার মাঝে কয়েকটি বাঙ্গির জমি। কিছু জমির ফসল তোলা শেষের দিকে। জমিতে শুয়ে আছে ৮-১০কেজি ওজনের বাঙ্গি। মৌসুমে যেই বাঙ্গি ১০০টাকা বিক্রি হতো। এখন তা বিক্রি হচ্ছে, ৫০০-৬০০টাকায়। বাঙ্গির চাহিদাও বেশ। বাজারে নেয়ার পথেই কাড়াকাড়ি লেগে যায়। গ্রামে প্রথম আগাম বাঙ্গি চাষ করেন প্রবাস ফেরত সাত্তার মিয়া।
সাত্তার মিয়া বলেন,আগে আমাদের বাপ দাদারা মাটিতে বীজ বুনতেন। এবার তিনি চারা তৈরি করে জমিতে লাগিয়েছেন। ব্যবহার করেছেন জৈব সার। নতুন পদ্ধতিতে চাষ দেখে অনেকে হাসাহাসি করেছেন। তিনি ৩০শতক জমিতে আগাম বাঙ্গির চাষ করেছেন। খরচ ১০হাজার টাকার মতো। এই পর্যন্ত বিক্রি সোয়া লাখ টাকা। আরো বিক্রির বাকি রয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে বালাই ব্যবস্থাপনা করায় ভালো ফসল হয়েছে। এখন ভালো ফলন হওয়ায় অন্যরাও আগ্রহী হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, তার থেকে চারা নিয়ে আরো কয়েকজন কৃষক বাঙ্গি চাষ করেছেন। তারাও ভালো ফসল পেয়েছেন।
কৃষক মহসিন মিয়া ও মো. ইয়াছিন বলেন, সাত্তারের ভালো ফলন দেখে তারা আগাম বাঙ্গি চাষ শুরু করেন। তারা তিন গুণের বেশি দাম পেয়েছেন। আগামীতে আরো বেশি জমিতে চাষ করবেন।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. কাউছার আহমেদ বলেন,এই ব্লকে ১০বিঘা জমিতে আগাম বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। জৈব সার ব্যবহারে এখানে ভালো ফলন হয়েছে। আমরা তাদের কারিগরি সহায়তা দিয়েছি। দিন দিন এখানে আগাম বাঙ্গি চাষের পরিমাণ বাড়ছে।

