কানাডার নির্বাচন: বাংলাদেশি অভিবাসীদের সহযোগিতার আশ্বাস

0

আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কানাডার ৪৫তম ফেডারেল নির্বাচন। এ উপলক্ষে দেশজুড়ে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে, প্রার্থীরা একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইলেকশন কানাডা ইতোমধ্যে পার্লামেন্টের ৩৪৩টি আসনের জন্য প্রায় ১ হাজার ৯০০ প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে লিবারেল পার্টি, কনজারভেটিভ পার্টি এবং এনডিপি—এই তিন প্রধান রাজনৈতিক দলই ৩৪২টি করে আসনে প্রার্থী দিয়েছে। লিবারেল পার্টির একটি আসনে দাপ্তরিক ভুল, কনজারভেটিভ পার্টির কুইবেক সেন্টারে এবং এনডিপির নোভাস্কিয়ার একটি আসনে প্রার্থী না থাকায় তারা পূর্ণ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছে না।

অটোয়ার কার্লটন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পয়লিয়েভ। এই আসনে সর্বোচ্চ ৮৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে লিবারেল পার্টির নেতা মার্ক কার্নি যে আসন থেকে নির্বাচন করছেন, সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা মাত্র পাঁচজন।

সর্বশেষ জনমত জরিপে লিবারেল পার্টিকে এগিয়ে রাখলেও ইমিগ্রেশন ইস্যু এই নির্বাচনে অনেকটাই অনুপস্থিত। গত দুই বছর ধরে ইমিগ্রেশন পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও নির্বাচনী প্রচারণায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রধান দলই ইমিগ্রেশন নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি।

এবারের নির্বাচনে পাঁচটি দল অংশ নিচ্ছে—লিবারেল পার্টি (মার্ক কার্নি), কনজারভেটিভ পার্টি (পিয়েরে পয়লিয়েভ), এনডিপি (জাগমিত সিং), ব্লক কুইবেক (ইভস ফ্রাঁসোয়া ব্লানচেট) এবং গ্রিন পার্টি (এলিজাবেথ মে ও জোনাথান পেডনলট)।

নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় প্রধানরা দেশের বিভিন্ন প্রদেশ সফর করছেন। এডমন্টনে কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পয়লিয়েভের এক বিশাল নির্বাচনী সমাবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন। প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এটি এডমন্টনের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ নির্বাচনী জমায়েত হয়ে ওঠে।

অন্যদিকে ৮ এপ্রিল ক্যালগেরিতে এক নির্বাচনী সভায় প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি কানাডাকে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে একসাথে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁর অভিজ্ঞতা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবারের নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলবে। নির্বাচনের পর যেই দলই ক্ষমতায় আসুক, তাকে অর্থনৈতিক মন্দা ও বাণিজ্য সংকট মোকাবেলা করতে হবে।

এদিকে ক্যালগেরি স্কাইভি আসনের লিবারেল এমপি জর্জ চাহাল বলেন, লিবারেল সরকার অতীতেও অভিবাসীদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তিনি বলেন, রিফিউজি ও বাংলাদেশি অভিবাসীদের সহযোগিতায় দলটি সবসময় সচেষ্ট থাকবে। সব কমিউনিটিকে সঙ্গে নিয়ে একটি শক্তিশালী কানাডা গড়াই তাদের লক্ষ্য।

দিন শেষে কানাডিয়ানদের নজর এখন ২৮ এপ্রিলের দিকে—একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, যেটি দেশটির ভবিষ্যতের গতিপথ নির্ধারণ করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here