থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় বোমাবর্ষণ তীব্র করার অভিযোগ করেছে কম্বোডিয়া। শুক্রবার হামলার অভিযোগটি এমন সময়ে এলো, যখন প্রাণঘাতী সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে আলোচনার লক্ষ্যে বহুদিনের বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিবেশী এই দুই দেশের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ চলতি মাসে আবারও সহিংস রূপ নিয়েছে। নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ায় আগের যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ে এবং এতে ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। পাশাপাশি প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
শুক্রবার কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা সীমান্ত চৌকিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। শনিবার দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের কথাও ছিল। তবে আলোচনার মধ্যেই কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী শুক্রবার সকালে বান্তেয়ে মিয়ানচে প্রদেশের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় ভারী বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সকাল ৬টা ০৮ মিনিট থেকে ৭টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত থাই সেনাবাহিনী এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে মোট ৪০টি বোমা নিক্ষেপ করে।’ এতে চোক চে গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়। অন্যদিকে থাই সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের সা কাইও প্রদেশের সীমান্ত এলাকায় কম্বোডিয়ান বাহিনী রাতভর ভারী হামলা চালিয়েছে। গোলাবর্ষণে সেখানে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়।
নতুন করে সংঘাত শুরুর জন্য উভয় দেশই একে অপরকে দায়ী করছে। এই সংঘাত এখন সীমান্তবর্তী প্রায় সব প্রদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুই দেশই দাবি করছে, তারা আত্মরক্ষার জন্যই সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে। একই সঙ্গে উভয়পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ তুলেছে। উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে টানা পাঁচ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল। তবে সেই যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
শুক্রবারের আগেই কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট ফেসবুকে জানিয়েছিলেন, তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। আলোচনায় কম্বোডিয়া–থাইল্যান্ড সীমান্তে আবারও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার উপায় নিয়ে মতবিনিময় করেন দুই নেতা। সূত্র: আল অ্যারাবিয়া, আনাদোলু এজেন্সি

