কঙ্গোতে রক্তক্ষয়ী সংঘাত: ৭ হাজারের বেশি নিহত

0

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) পূর্বাঞ্চলে চলমান সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ, যাদের উল্লেখযোগ্য অংশ বেসামরিক নাগরিক।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিআর কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রী জুডিথ সুমিনাওয়া জানান, গত মাস থেকে পূর্বাঞ্চলে লড়াইয়ে ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে “উল্লেখযোগ্য” সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।

সংকট আরও গভীর হচ্ছে
সোমবার সুইজারল্যান্ডে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দেওয়া বক্তব্যে সুমিনাওয়া বলেন, “ডিআর কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি চরম উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।”

তিনি জানান, নর্থ কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমায় প্রায় ৩ হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পরিচয় শনাক্ত না করে ইতোমধ্যে ২,৫০০ জনেরও বেশি লাশ দাফন করা হয়েছে, এবং আরও ১,৫০০ জনের লাশ এখনো মর্গে পড়ে আছে।

বিদ্রোহীদের দখলদারি ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী দক্ষিণ কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমা ও বুকাভুর মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোসহ পূর্ব ডিআরসির বিশাল অংশ দখল করেছে। বিদ্রোহীদের দ্রুতগতির আক্রমণ জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসসহ বিশ্বনেতাদের গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, “এই লড়াই পুরো অঞ্চলকে গ্রাস করতে পারে।”

রুয়ান্ডার প্রত্যাখ্যান, নিষেধাজ্ঞার দাবি
রুয়ান্ডা অবশ্য ডিআর কঙ্গো, জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে যে, তারা অস্ত্র ও সৈন্য দিয়ে বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে।

সোমবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সুমিনাওয়া বিশ্বকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এই সংঘাতের শিকার লক্ষাধিক মানুষের আর্তনাদ এবং কান্নার বর্ণনা দেওয়া অসম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্বকে অবশ্যই কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে, যেন এই সংকট নিরসন সম্ভব হয়।”

জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বলেন, “ডিআর কঙ্গোর সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। যত বেশি শহরের পতন হচ্ছে, আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি ততই বাড়ছে। এখনই অস্ত্রের নীরবতার সময় এসেছে।”

বাস্তুচ্যুতি বাড়ছে
বিদ্রোহী যোদ্ধারা গত মাসে প্রথমে গোমা দখল করে এবং এক সপ্তাহ আগে বুকাভুর নিয়ন্ত্রণ নেয়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, শুধু গত দুই সপ্তাহেই সহিংসতার কারণে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ প্রতিবেশী বুরুন্ডিতে পালিয়ে গেছে।

সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here