ভারতের উড়িষ্যায় কংগ্রেস নেতা ও রাজ্যসভার সদস্য ধীরজ সাহুর বাড়ি থেকে ১৭৬টি রুপির বস্তা জব্দ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই)। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেল ধীরজ সাহুর ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের বাড়ি থেকে। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাচিতে তার বাড়িসহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালান রাজস্ব গোয়েন্দারা।
আয়কর সূত্রে জানানো হয়েছে একটি মদ প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং তার সঙ্গে যুক্ত আনুষঙ্গিক সংস্থা থেকে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির সূত্র ধরে এই অভিযান চালানো হয় কংগ্রেস সাংসদ এবং এই সংস্থায় কর্মরত বিভিন্ন কর্মীর বাসা, কারখানায়। পরে সেই উদ্ধারকৃত অর্থ নিয়ে আস হয় ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’ (এসবিআই)-এর বোলাঙ্গি শাখায়।
তিনি আরো জানান, এখনো পর্যন্ত ১৭৬টি রুপির বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪০ টি রুপির বস্তা গোনার কাজ শেষ হয়েছে। এবার বাকি থলেগুলোর গণনার কাজ হাত দেওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত ৪০ কোটি রুপির অর্থ গোনা হয়েছে। তিতলাগড় এলাকাতেও কিছু অর্থ গোনার কাজ চলছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ গোনার জন্য ব্যাংক চত্ত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রের খবর- উদ্ধারকৃত ওই বেআইনি অর্থের পরিমাণ প্রায় ২২৫ কোটি রুপি। বিপুল পরিমাণ অর্থ গোনার জন্য প্রায় ৩৫টিরও বেশি ক্যাশ কাউন্টিং মেশিন কাজে লাগায় আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। যদিও এই বিপুল পরিমাণ অর্থ গোনার ক্ষেত্রে মেশিনের সংখ্যা নেহাতই নগণ্য, স্বাভাবিকভাবে এই রুপি গুনতে সময়ও লাগছে বেশি।
আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন- প্রায় ২০০ কোটি রুপি অর্থ পাওয়া যায় কংগ্রেস সংসদ সদস্যের মালিকানাধীন সংস্থা ‘বৌধ ডিসটিলারি প্রাইভেট লিমিটেড’-এর বোলাঙ্গি জেলায় অবস্থিত অফিস চত্ত্বরে থাকা একটি ঘরের আলমারি থেকে। বাকি অর্থ উদ্ধার হয় ওড়িশার সম্বলপুর ও সুন্দরগড় এবং ঝাড়খণ্ডের বোকারো ও রাঁচি থেকে। ভুবনেশ্বরের পলাশাপল্লী এলাকায় ‘বৌধ ডিসটিলারি প্রাইভেট লিমিটেড’এর কর্পোরেট অফিস এবং কয়েকজন কর্মচারীর বাসাতেও অভিযান চালায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
সাবেক আয়কর কর্মকর্তা শরৎচন্দ্র দাস ও কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তার কর্মজীবনেও এত বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। তিনি বলেন, উড়িষ্যায় আয়কর কর্মকর্তাদের অভিযানে এখনো পর্যন্ত এটাই বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার।
এদিকে, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারের পরে টুইট করে বিরোধীদের নিশানা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লেখেন- দেশবাসীর উচিত এই অর্থের স্তূপের দিকে নজর দেওয়া এবং তারপর সততার বিষয়ে কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য শোনা। মানুষের কাছ থেকে লুট করা প্রতিটি পয়সা ফেরত দিতে হবে। এটাই মোদির গ্যারান্টি।