ওমানে প্রথম দফা ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা সমাপ্ত : আগামী সপ্তাহে ফের বৈঠক

0

দীর্ঘ দশকের উত্তেজনার পর ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র ওমানে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসেছে। শনিবার  ওমানের রাজধানী মাসকটের উপকণ্ঠে এই আলোচনার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যা প্রায় আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী হয়। আলোচনার পর দুই পক্ষই জানায়, আগামী ১৯ এপ্রিল আবারও বৈঠক হবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আলোচনাকে ‘গঠনমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, আলোচনার সময় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র চার দফা বার্তা বিনিময় করেছে ওমানের মধ্যস্থতায়। আলোচনার শেষে আরাগচি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ কিছু সময়ের জন্য সরাসরি কথা বলেন, যা দুই দেশের মধ্যে বিরল এক মুহূর্ত।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস্মাইল বাঘায়ি বলেন, আমাদের লক্ষ্য খুব পরিষ্কার—জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা। আলোচনা কূটনীতিকে একটা সৎ সুযোগ দেওয়া। তিনি জানান, আলোচনা মূলত পরমাণু ইস্যু ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া নিয়ে কেন্দ্রিভূত।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে আলোচনার সময় উইটকফ বলেছেন, আমাদের অবস্থান হলো, আপনাদের পরমাণু কর্মসূচির অবসান চাই। তবে প্রয়োজনে আপোষের পথও খোলা।

আলোচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় ছিল—ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমা ও নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণ। ২০১৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ৩.৬৭% মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারত। এখন তারা ৬০% পর্যন্ত সমৃদ্ধ করছে, যা অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৮ সালে একতরফাভাবে চুক্তি বাতিল করেছিলেন। এরপর থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। আবার আলোচনায় বসা দু’দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ—বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন সমাধানের ইঙ্গিত দিচ্ছে এই উদ্যোগ।

তবে ইরান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করা হবে না। ফলে আলোচনার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে কতটা ছাড় দিয়ে দু’পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে তার উপর। আলোচনার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও উত্তেজনা কমানোর একটা নতুন পথ খুলে যেতে পারে বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here