ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে যুক্ত চিত্রটাই তো হৃদয়বিদারক। হাহাকার জাগানিয়া। গাজার আল আকসা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে নিথর হয়ে বাড়ি ফেরা ছোট্ট এক মানব শিশু, যাকে মুড়ে রাখা হয়েছে সফেদ বসনে। তার ওপর কিছু একটা লিখে দিচ্ছেন হাসপাতাল কর্মী। হয়তো কোনো সংখ্যা খোদাই করা হচ্ছে তার কাফনে। যে শুভ্র বসনেই তাকে রাখা হবে মাটির গভীরে, কপাটহীন ঘরে। কোনো ভোরের আলোর স্পর্শে আর জেগে উঠবে না তার চঞ্চল দু’টি চোখ। নিঃশ্বাসের বায়ু কম্পনে কেঁপে উঠবে না তার ফুসফুস। হৃদপিণ্ডও ছড়িয়ে দেবে না তপ্ত রক্ত তার শিরায় শিরায়। জীবনের রূপ-রঙ ছুঁয়ে ছেনে দেখার আগেই তার সব কেড়ে নিয়েছে ইসরায়েলি বোমা। সে এখন নিছক সংখ্যা কেবল। গাজায় প্রতি বছর এরকম হাজার হাজার শিশু কেবল সংখ্যা হয়ে তলিয়ে যায় বালুময় মাটির গহ্বরে।
মধ্য গাজার আল আকসা হাসপাতালটির মরদেহ আবৃত করার কাপড়ের বিশেষ মোড়কও ফুরিয়ে গেছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে একের পর এক মরদেহ সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। সেখানেই আদায় করা হচ্ছে তাদের জানাজা নামাজ। স্বজনদের ক্রন্দনে ভারী হয়ে উঠছে আকাশ-বাতাস।
তবুও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে আহতদের বাঁচিয়ে রাখার লড়াই। কিন্তু ইসরায়েল থেমে নেই। হামাস নিধনের নামে একের পর এক নির্বিচার বোমা ফেলছে গাজার বেসামরিক এলাকায়। এমনকি তাদের বর্বরতা থেকে হাসপাতাল ও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোও রক্ষা পাচ্ছে না।
শনিবার রাতে চালানো হামলাতেও গাজায় শতাধিক মানুষের প্রাণ গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
যদিও ইসরায়েল দাবি করছে, তারা বেছে বেছে হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করেই হামলা চালাচ্ছে।
হাসপাতালের এক কর্মী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, ‘মৃতদেহ আবৃত করার মতো যথেষ্ট মোড়কও আমাদের কাছে নেই, কারণ মৃতের সংখ্যা ব্যাপক। অধিকাংশ মরদেহই আসছে ছিন্নভিন্ন ও টুকরো টুকরো অবস্থায়। অনেককে আমরা চিহ্নিতও করতে পারছি না, কারণ সেসব দেহ বিচ্ছিন্ন ও থেতলে গেছে।’
তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতি গাজাবাসী এর আগে কোনোদিন প্রত্যক্ষ করেনি।
সূত্র: বিবিসি