কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠের তৈরি খেলনা। এতে যেমন ঐতিহ্য হারাচ্ছে এ শিল্প, তেমনি খেলনা বানানো এ পেশা থেকে অন্য পেশায় যাচ্ছেন কারিগররা। বিক্রি আর চাহিদা কম থাকায় কোনোমতে পেট চলে এসবের কারিগরদের। যেকোনো মেলা, পয়লা বৈশাখ বা পূজা-ঈদে কিছুটা চাহিদা বাড়ে এসব কাঠের খেলনার।
এ ছাড়া প্লাস্টিকের তৈরি খেলনার ভিড়ে কাঠের তৈরি খেলনা পূর্ণতা পায় না কোনো দোকানে। এসব কাঠের খেলনা তৈরি হয় নীলফামারীর সৈয়দপুরের বাঙালিপুরে দু’একটি কারখানায়।
খেলনা তৈরির কারিগর সেলিম উদ্দিন জানান, আমার বাপ-দাদাও এই পেশায় জড়িত ছিল। ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমি এই পেশায় কাজ করছি। ঈদ-পূজা ছাড়া এসব খেলনা বিক্রি হয় না। এখন প্লাস্টিকের কারণে খেলনার চাহিদা খুবই কম। খেলনা তৈরি করে কোনোমতে আমাদের সংসার চলে। গ্রামবাংলার এসব খেলনা কেউ নিতে চায় না। আগে দিনে কমপক্ষে ১ হাজার খেলনা বিক্রি হতো। এখন পুরো বছরজুড়ে ১৫ হাজার বিক্রি হয় না। আমাদের সরকারিভাবে সহায়তা করলে আমরা এ পেশা টিকে রাখতে পারব।
নাসিমা বেগম নামে খেলনা তৈরির আরেক কারিগর বলেন, আমি বাড়ির কাজ করার পাশাপাশি এখানে এসে কাজ করি। আমার বিয়ে হয়েছে ২০ বছর আগে, তখন থেকে এসব কাজ করি। আমাদের এখানে আগে বিক্রি খুব ছিল। এখন তেমন বিক্রি হয় না, যা বিক্রি হয় তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে।
সৈয়দপুরের বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, এক সময়ের ঐতিহ্য এখন দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তবে এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে মাত্র কয়েকটি কারখানা রয়েছে। আমরা তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। আমাদের অফিস থেকে বিভিন্ন সময়ে তাদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়।