এবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে হামলা চালাল ইসরায়েল। এতে অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশের পর এই হামলা শুরু করল ইসরায়েলি বাহিনী। মিশর সীমান্তবর্তী ওই শহরে ইসরায়েলি এই হামলায় তিনটি পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছে। নিহতদের প্রায় ১০ জনই শিশু। এর মধ্যে এক শিশুর বয়স মাত্র তিন মাস।
গাজার অন্তত ১০ লাখ বাসিন্দা ঠাঁই নিয়েছে মিশর সীমান্তবর্তী ওই এলাকায়। হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দাদের সরে যেতে নির্দেশ দেয় ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আইডিএফের এ হামলায় হতাহতের শিকার হবে বিপুলসংখ্যক গাজাবাসী। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা সতর্ক করে বলেছে ইসরায়েলের এ হামলার ফলে পুরোপুরি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হবে গাজাবাসী। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনে নিযুক্ত ত্রাণ সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, হামলার এ ঘোষণায় রাফাহতে উদ্বেগ ও আতঙ্কে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ।
এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকের পর গাজার দক্ষিণাঞ্চলে হামলার এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন নেতানিয়াহু। সেখানে হামলা শুরুর আগে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে আইডিএফকে পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। বেসামরিক নাগরিকদের সরানোর পাশাপাশি রাফাহ শহরে অবস্থিত হামাসের ঘাটিগুলোতে হামলার নির্দেশনাও রয়েছে বলে জানা গেছে।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর থেকেই তেল আবিবকে সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গত চার মাসে প্রথমবারের মতো নিজেদের সুর পাল্টিয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউজ বলছে, এ হামলা বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেয় না। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এমন হামলা সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইসরায়েলকে নির্দেশ করে মার্কিন অস্ত্র সহায়তা পাওয়া দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
অন্যদিকে ইসরায়েলকে নতুন করে কোনও অস্ত্র সহায়তা করা হবে না বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়ের। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা তাদের (ইসরায়েলকে) নতুন করে কোনও সামরিক সহায়তা দিচ্ছি না।”
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচারে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে সেখানে প্রাণহানির সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৬৭ হাজার ৬১১ জন। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স