একজন অর্থনীতিবিদকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বানাচ্ছেন পুতিন, কিন্তু কেন?

0

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই শোইগুকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার স্থলাভিসিক্ত হতে যাচ্ছেন উপ-প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রে বেলোসোভ, যিনি একজন অর্থনীতিবিদ। তবে তার সামান্য সামরিক অভিজ্ঞতাও রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, রুশ প্রসিডেন্ট পুতিনের এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দিচ্ছে- রাশিয়ার অর্থনীতিকে তিনি তার যুদ্ধ প্রচেষ্টার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত করতে চাচ্ছেন।

তিনি বলেন, জিডিপির একটি বড় অংশ সামরিকখাতে ব্যয় করার পর থেকে রাশিয়া অনেকটা ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো হয়ে উঠেছিল।

দিমিত্রি পেসকভ বলেন, সামরিক ব্যয়কে রাশিয়ার সামগ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে আরও ভালোভাবে সংহত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার। আর যে ব্যক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বেশি খোলামনের তিনিই যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়ী হবেন।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শোইগুর স্থলে নতুন কেউ আসার বিষয়টি তেমন আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু নয়। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে শোইগুর অবস্থান বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমনকি এটাও শোনা যাচ্ছিল যে, তাকে পদচ্যুত করানো হতে পারে।

মূলত রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানে সামরিক বিপর্যয় এবং শক্তি ও সম্পদের বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এজন্য অনেকে শোইগুকেই দায়ী করে থাকেন।

এক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে একজন অর্থনীতিবিদ থাকাটা ক্রেমলিনের পরিবর্তিত অগ্রাধিকার নীতিরই প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।

রাশিয়ার অর্থনীতি এখন যুদ্ধকালীন সময় পার করছে। তাই যুদ্ধের অর্থায়নের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট অর্থ থাকা অত্যাবশ্যক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রুশ সরকারের এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে স্বাধীন রুশ ওয়েবসাইট দ্য বেল জানিয়েছে, বেলোসভকে রাষ্ট্রের একজন কঠোর রক্ষক হিসেবে দেখা হয়, যিনি বিশ্বাস করেন- রাশিয়া শত্রু দিয়ে ঘেরা।

পুতিনের মতো তারও রুশ অর্থোডক্স চার্চের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট পুতিনের মতো তিনি মার্শাল আর্টের ব্যাপারেও বেশ উৎসাহী। তরুণ বয়সে বেলোসভ কারাতেসহ বিভিন্ন খেলার অনুশীলন করতেন।

উপ-প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সহযোগী হিসেবে বেশ কয়েক বছর কাজ করেছেন। এর আগে অর্থনৈতিক উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ করে তখন সেটাকে সমর্থন করার জন্য পুতিন একটি অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দল গঠন করেছিলেন। বেলোসভ ওই দলের সদস্য ছিলেন।

অপরদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন সেরগেই শোইগু। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। পুতিনকে তিনি প্রায়ই নিজের জন্মভূমি সাইবেরিয়ায় মৎস্য শিকারে নিয়ে যেতেন।

তাদের ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে ছিল যে, পূর্ব কোনও সামরিক অভিজ্ঞতা না থাকলেও শোইগুকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্বে দিয়েছিলেন পুতিন। পেশাগত জীবনে শোইগু ছিলেন একজন প্রকৌশলী। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here