শীতে উষ্ণতার খোঁজ কে না করেন। কিন্তু জবুথবু উষ্ণতায় কি আর মন ভরে? থাকুক না একটু নতুনত্ব, একটু ভিন্নতা আর ওয়েস্টার্ন লুকের আবেশ। আর হবেই না কেন, তারুণ্য তো সদা নতুন পছন্দ করে। ওয়েস্টার্ন পোশাক পুরু হওয়ায় একদিকে যেমন শীত কাটে ভাবনাহীন, অন্যদিকে ফ্যাশনে আনে নতুনত্ব
হাল ফ্যাশন মানে নতুনের সংযোজন। আধুনিক থেকে আরও আধুনিক। নজরকাড়া থেকে আরও আকর্ষণীয়। পোশাক, অনুষঙ্গ, মেকআপ সবখানেই থাকতে পারে তার ছোঁয়া। তবে আধুনিকতার মূল প্রভাব থাকে পোশাকেই। সেখান থেকেই পরিবর্তন ঘটে অন্য সবকিছুর।
এক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত পোশাক রীতির সঙ্গে পা মেলাতে যুক্ত হয় ভিন্ন পোশাক রীতি। সে বিচারে ওয়েস্টার্ন পোশাক সবচেয়ে এগিয়ে। বিশেষত তরুণদের কাছে ওয়েস্টার্ন পোশাক একটু বেশিই আবেদন ছড়াতে সক্ষম। শীত এলে সেই সুযোগটিও যেন মেলে বেশি বেশি।
বেশির ভাগ ওয়েস্টার্ন পোশাকে সহজেই শীত ঠেকায়, তেমনি আবার ফ্যাশনটাও ঠিক থাকে। শীতের ওভারকোট, লং কোটি, ডেনিম, জ্যাকেট, জিন্স, ফুলস্লিভ টিশার্ট, পুরু কাপড়ের শার্ট, স্কার্ট, ব্লেজারসহ এ ধরনের যত পোশাক আছে সবই যেন চোখ বন্ধ করে শীতের প্রতিরোধক হিসেবে উল্লেখ করা যায়। এসব পোশাক হতে পারে নানানরকম ফেব্রিক্স আর ভিন্ন রঙের। লেদার, সেমি লেদার, উল, ডেনিম, কটন ইত্যাদি হতে পারে। তবে কদরের বিচারে সম্পূর্ণ লেদারের একটি জ্যাকেটের অবস্থান সবার ওপরেই ধরা হয়। এগুলো একটু ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় সেমি লেদারও প্রাধান্য পায় কম না। দৈর্ঘ্য-প্রস্থেও থাকতে পারে ভিন্নতা। কোনোটি হাঁটু ছুঁইছুঁই। কোনোটি কোমর অবধি। আজকালের ফ্যাশনে যুক্ত হওয়া পঞ্জের ধারণাও এসেছে ওয়েস্টার্ন থেকে। সাধারণ সোয়েটারও ওয়েস্টার্ন থিমের পোশাক হিসেবে ধরা হয়। শীত আর কুয়াশা ঠেকাতে বাহারি টুপিও তালিকা থেকে বাদ যায় না। হাত মোজাতেও দেখা যায় নানা রং ঢং। হাইনেক জুতা তো আছেই। এই শীতে বাঙালি ছেলেমেয়েদের কাছে বেশি প্রিয় হয়ে ওঠে কনভার্স, লোফার আর কেডস। শীতে পায়ের সুরায় এগুলোর বিকল্প পাওয়া দায়।
বর্তমান ট্রেন্ডি ওয়েস্টার্ন পোশাকের পাশাপাশি দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাকও গুরুত্ব পাচ্ছে তরুণ-তরুণীদের কাছে। সেজন্য ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে দেশীয় পোশাকের মিশেলেও কেউ কেউ পরে থাকেন। যারা ফ্যাশন-সচেতন, তাদের কাছে দেশীয় পোশাক যেমন পছন্দের একই সঙ্গে পছন্দ ওয়েস্টার্ন পোশাক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণ-তরুণী থেকে এক্সিকিউটিভ লেভেলের নারী-পুরুষরাও আজকাল ওয়েস্টার্ন পোশাকে নিজেকে উপস্থাপন করছেন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি, ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে লুকটাও ওয়েস্টার্ন হওয়া জরুরি।
তবে শীতে ওয়েস্টার্ন পোশাকের ফ্যাশন কেমন হবে তা নির্ভর করবে পুরোটাই আপনার ড্রেসকোডের ওপর। যেমন- ধরুন অফিসিয়াল লুকে কোট-প্যান্ট থাকলে তার সঙ্গে মানিয়ে পরতে হবে একই কালারের মাফলার। বর্তমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে দেশি ব্র্যান্ডগুলো প্রস্তুত করছে উন্নতমানের মাফলার। অন্যদিকে মেয়েদের মাফলার সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উলের ব্যবহার বেড়েছে নজরকাড়া রূপে। একই সঙ্গে মেয়েদের টুপিতে আনা হয়েছে ওয়েস্টার্ন লুক। কেউ কেউ তো উলেন টপস আর প্যান্ট পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। লং ফিটিং সোয়েটারের ব্যবহারও বাড়ছে দিন দিন। এর সঙ্গে লং কোটি জড়িয়ে নিলে লুকটি হয় আরও গর্জিয়াস।
ওয়েস্টার্ন ড্রেসের সঙ্গে সাজসজ্জা হতে হবে একদমই বুঝেশুনে। প্যান্টের সঙ্গে টি-শার্ট পরলে কানে ও গলার গয়না নির্ভর করে টি-শার্টের গলার ধরনের ওপর। হাই নেক টি-শার্টে বড় ঝুলের মালা, ডাউন নেক টি-শার্টে গলায় লকেট অথবা গলাজুড়ে থাকা বড় পুঁতি ও পাথরের মালা পরা যেতে পারে। কিন্তু টি-শার্টে অনেক কাজ করা থাকলে গলায় কিছু না পরাই ভালো। রাতে ফর্মাল ড্রেস পরলে চুল খোলা রাখাটাই বাঞ্ছনীয়। এখন যেহেতু শীত, তাই টি-শার্ট বা টপসের সঙ্গে মানিয়ে পরতে পারেন লেদারের জ্যাকেট। এসবের সঙ্গে দেশীয় শালও কিন্তু খারাপ লাগে না। বরং শাল আর টুপিতে বেশ নজরকাড়া লাগে।