পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর জনবল বরাদ্দ না দেওয়ায় উদ্বোধনের চার বছর পার হলেও দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের রানীরবন্দর ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটি চালু হয়নি। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকার মানুষ।
আধুনিক অবকাঠামো, বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে। ব্যবহারের অভাবে ওই যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হতে বসেছে। এছাড়া এক বছরের বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় যে কোনো সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা যায়।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউপিতে রানীরবন্দর ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়ন ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে কোটি টাকা ব্যয়ে কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। ২০২২ সালের জুন মাসে তৎকালীন স্থানীয় এমপি এই কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন।
নশরতপুর গ্রামের রশিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম বলেন, মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য সরকার কোটি টাকা খরচ করে হাসপাতালটি নির্মাণ করল, অথচ ডাক্তার-নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়নি। হাসপাতালটিতে ডাক্তার থাকলে আশপাশের হাজারো মানুষের উপকার হতো। আমরা চাই দ্রুত হাসপাতালটিতে ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হোক।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মশিউর রহমান জানান, রানীরবন্দর ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটি চালু হলে আশপাশের তিনটি ইউনিয়ন, নশরতপুর, তেঁতুলিয়া ও আলোকডিহির হাজারো মানুষ উপকৃত হবেন। তিনি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালে আধুনিক ভবন, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ডাক্তারদের থাকার আবাসিক ভবন সবই রয়েছে। কিন্তু অজানা কারণে এখানে ১৬ জনের একজনও লোকবল নিয়োগ দেয়নি সরকার। কেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়ে গর্ভবতী মা ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য রানীরবন্দরের বেসরকারি ক্লিনিক বা ১৫ কিলোমিটার দূরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে হয়।
মশিউর রহমান আরও জানান, ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সপ্তাহে দুইদিন একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রাখা হয়েছে, যিনি জ্বর-সর্দিসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ প্রদান করেন।
মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী বেলাল হোসেন বলেন, হাসপাতালটি উদ্বোধনের পর থেকে আমি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করে আসছি। কিন্তু ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছি না, তাই সপ্তাহে একদিন করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে চলে আসি।
চিরিরবন্দর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরমান জনি বলেন, ১৬ জনের বিপরীতে কোনো জনবল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এমন অবস্থায় তারা ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদায়ন করেছেন, যিনি সপ্তাহে দুইদিন সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে থাকেন।

