ইস্টারে পোপের উপস্থিতি ঘিরে ক্যাথলিক বিশ্বাসীদের মধ্যে উদ্বেগ

0

প্রাণঘাতী নিউমোনিয়া থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। ৮৮ বছর বয়সী এই ধর্মগুরুর ধীরে ধীরে শারীরিক উন্নতি হলেও আসন্ন ইস্টার সপ্তাহে তাঁর সরাসরি অংশগ্রহণ নিয়ে ক্যাথলিক বিশ্বাসীদের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে।

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ইস্টারকে ঘিরে রয়েছে একাধিক ধর্মীয় আয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে ‘ওয়ে অব দ্য ক্রস’ (ক্রুশের পথ) ও ‘ইস্টার ভিজিল’-এর মতো অনুষ্ঠান, যেখানে সাধারণত পোপ নিজে উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।

ভ্যাটিকান সিটির তথ্যমতে, রোমের জেমেলি হাসপাতালে প্রায় ৪০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৩ মার্চ বাসায় ফেরেন পোপ। চিকিৎসকেরা তাকে অন্তত দুই মাস বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিলেও তিনি পুরোপুরি তা মানেননি। সম্প্রতি পাম সানডের প্রার্থনায় অংশ নিয়ে তিনি সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে ভক্তদের আশীর্বাদ দেন, শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন এবং করমর্দন করেন। এ সময় তার মুখে অক্সিজেনের নলও দেখা যায়নি।

এরপর গত বুধবার তিনি ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেন ব্রিটেনের রাজা চার্লস তৃতীয় ও রানি ক্যামিলার সঙ্গে। বৃহস্পতিবার সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় সংস্কারকাজ ঘুরে দেখেন এবং তীর্থযাত্রীদের শুভেচ্ছা জানান। এছাড়া শনিবার যান তার প্রিয় গির্জা সান্তা মারিয়া মাজিওরে।

তার স্বাস্থ্যের অবনতির সময় পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন উঠলেও এখন ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি। তবে এখনও নিশ্চিত নয় তিনি ইস্টার সপ্তাহের সকল ধর্মীয় আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন কি না।

ভ্যাটিকানের প্রেস অফিস জানিয়েছে, পোপের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তার হাঁটা, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং কথা বলার সামর্থ্য আগের চেয়ে ভালো। তবে তিনি আসন্ন অনুষ্ঠানগুলোতে সরাসরি অংশ নেবেন কি না, তা এখনও বলা সম্ভব নয়।

তবে ভ্যাটিকান নিশ্চিত করেছে, ইস্টার সানডেতে ঐতিহ্য অনুযায়ী ‘উরবি এত ওরবি’ (শহর ও বিশ্বের প্রতি) আশীর্বাদ দেবেন পোপ। বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার বারান্দা থেকে এই আশীর্বাদ সম্প্রচার করা হবে। তবে আশীর্বাদের পর বক্তব্য পোপ নিজে দেবেন, নাকি অন্য কেউ পাঠ করবেন—এটি এখনো নির্ধারিত হয়নি।

২০২৫ সাল ক্যাথলিক চার্চের জন্য একটি বিশেষ বর্ষ ‘জুবিলি ইয়ার’। প্রতি ২৫ বছরে একবার উদযাপিত এই বর্ষে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী অংশ নেন, ফলে পোপের ভূমিকাও হয়ে উঠেছে আরও গুরুত্বপূর্ণ।

মণ্ডি বৃহস্পতিবারের ‘ক্রিসম মেস’, গুড ফ্রাইডের প্রার্থনা এবং কলোসিয়ামে ‘ওয়ে অব দ্য ক্রস’ অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য আয়োজনে পোপ অংশ নেবেন কিনা, তা এখনও অনিশ্চিত। গত দুই বছর ‘ওয়ে অব দ্য ক্রস’-এ তিনি শারীরিক কারণে অংশ নিতে পারেননি, তবে ইস্টার ভিজিলে উপস্থিত ছিলেন।

ইতালির সন্ন্যাসিনী সিস্টার এরমেলিন্দা পেত্তেনন বলেন, “এই পবিত্র বছরের ডাক তিনিই দিয়েছেন। আর এখন প্রভু তাকে এক পরীক্ষার মুখে ফেলেছেন। গুরুত্বপূর্ণ হলো, তিনি কীভাবে এই কষ্টকে গ্রহণ করছেন।”

এই ইস্টার সপ্তাহে পোপের প্রত্যাশিত উপস্থিতি একদিকে যেমন আশা জাগায়, অন্যদিকে তা তাঁর স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে বলেও মনে করছে ভ্যাটিকান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here