ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনিদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের প্রমাণ প্রকাশ

0
ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনিদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের প্রমাণ প্রকাশ

ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যৌন নিগ্রহ, মারধর ও অপমানের ভয়ংকর চিত্র। অভিযোগ অনুযায়ী, ইসরায়েলি কারা ব্যবস্থায় ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন এখন পদ্ধতিগতভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

জাতিসংঘের কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার জানিয়েছে, কারাগারে মানবাধিকার লঙ্ঘন উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস হামলার পর বন্দীদের ওপর নির্যাতন আরও তীব্র হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো একে ‘রাষ্ট্রীয় নীতি’ বলেও আখ্যা দিয়েছে।

ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, সবই আইনানুগভাবে পরিচালিত। তবে বিবিসির সাক্ষাৎকারে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন সাংবাদিক সামি আল–সাইয়ি এবং পশ্চিম তীরের বাসিন্দা আহমেদ। অভিযোগ অনুযায়ী, তাদের বিবস্ত্র করা হয়, মারধর করা হয় এবং অপমানজনক অত্যাচার চালানো হয়।

সামি জানান, তাকে কোনো চার্জ ছাড়াই ১৬ মাস আটক রাখা হয়েছিল। প্রশাসনিক আটকের মাধ্যমে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন’ ব্যবস্থার অধীনে বন্দী করা হয়। তিনি দাবি করেন, কারাগারে রক্ষীরা নিয়মিত মারধর করত এবং ভয়ভীতি দেখাত।

অন্যদিকে আহমেদ বলেন, ৭ অক্টোবরের ঘটনার সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার পর তাকে আটক করা হয়। তার দাবি, আটকাবস্থায় তাকে শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণের শিকার হতে হয়।

এদিকে ২০২৪ সালে সামরিক কারাগারের একটি সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনা তৈরী হয়। সেখানে এক ফিলিস্তিনি বন্দীর ওপর নির্যাতনের ঘটনা দেখা যায়। ওই মামলায় পাঁচজন ইসরায়েলি সেনার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

তবে কট্টর ডানপন্থি দলগুলো বরখাস্ত সেনাদের সমর্থন করছে এবং অভিযোগ অস্বীকার করছে। এক জরিপে অনেক ইসরায়েলি নাগরিক জানায়, গাজার বন্দীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় সেনাদের বিচার হওয়া উচিত নয়।

বর্তমানে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এদের অনেকের বিরুদ্ধেই কোনো চার্জশিট নেই। জাতিসংঘ জানিয়েছে, বন্দীদের ওপর সহিংসতা ও কারাগারের অবস্থা গভীরভাবে উদ্বেগজনক।

সূত্র: বিবিসি 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here