ইরান কী পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে

0

ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমকে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মানের কাছাকাছি। বিশ্ব পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি দাভোসে চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন।   

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা অব্যাহত থাকলেও, গ্রোসি জানিয়েছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এমন কোনো প্রমাণ সংস্থার কাছে নেই। তবে তিনি বলেছেন, তেহরান তাদের বর্তমান ও অতীত পারমাণবিক কার্যক্রম সম্পর্কে পুরোপুরি সহযোগিতা করছে না। ‘আমরা প্রয়োজনীয় স্থান ও পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করতে পারছি না,’ বলেন তিনি।  

গ্রোসি উল্লেখ করেছেন, ইরান বর্তমানে ইউরেনিয়ামকে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় সমৃদ্ধ করছে, যা পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি। তবে ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তারা পারমাণবিক শক্তি শুধু বেসামরিক ব্যবহারের জন্যই সমৃদ্ধ করছে। 

২০১৯ সাল থেকে ইরান তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম বাড়িয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সঙ্গে করা চুক্তির অধীনে তারা সমৃদ্ধকরণ সীমিত রেখেছিল। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর থেকেই ইরানের কার্যক্রম পশ্চিমা বিশ্ব সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছে।   

গত মাসে গ্রোসি ইরান সফর করেন এবং তেহরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দির সঙ্গে আলোচনা করেন। আলোচনা মূলত পরমাণু স্থাপনাগুলোর পর্যবেক্ষণ বাড়ানো এবং অঘোষিত স্থানে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা পাওয়ার ওপর কেন্দ্রীভূত ছিল।  

দাভোসে এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি ভারতের পারমাণবিক চুল্লিগুলোর নিরাপত্তা সম্পর্কে বলেন, ভারতের পরমাণু কর্মসূচি আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিচালিত হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ।   

এছাড়া ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। জাপোরিঝিয়া পরমাণু স্থাপনাটি যুদ্ধক্ষেত্রের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ‘বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং শেলিংয়ের কারণে যে কোনো সময় বড় ধরনের পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে,’ বলেন গ্রোসি।  

এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ উভয়ের জন্যই পারমাণবিক নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে ধরেছে। বৈশ্বিক পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করে এই ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলা করা জরুরি।  

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here