ইরানের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল চোরাচালানের অভিযোগে গ্রিক জাহাজ কোম্পানি এম্পায়ার নেভিগেশনকে ২৪ লাখ ডলার জরিমানা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালত। কোম্পানিটি এ অর্থ দিতে সম্মত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আদালতের নথির বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরুর দিকে সুয়েজ রাজন যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ পায়। ওই সময় তেহরানের বিরুদ্ধে কাজ করছিল ‘ইউনাইটেড এগেইনস্ট নিউক্লিয়ার ইরান’। তখন গ্রুপটি সন্দেহ করে, পারস্য উপসাগরে ইরানের প্রধান জ্বালানি তেল টার্মিনাল খারঘ দ্বীপ থেকে চালান নিয়ে গেছে ট্যাংকারটি।
কয়েক মাস ধরে জাহাজটি সিঙ্গাপুরের উত্তর-পূর্ব উপকূলে দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থান করছিল। হঠাৎ কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই মেক্সিকো উপসাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। তখন ধারণা করা হয় জাহাজটির পণ্য যুক্তরাষ্ট্র জব্দ করেছে। পরে জ্বালানি তেল টেক্সাসের হিউস্টনে পৌঁছে। আদালতের নথি নিশ্চিত করেছে- মার্কিন সরকার জ্বালানি তেল জব্দ করেছে।
সুয়েজ রাজনকে আমেরিকার দিকে নিয়ে যাওয়ার পর হরমুজ প্রণালীর কাছে দুটি ট্যাংকার আটক করে ইরান। যার মধ্যে একটি ছিল মার্কিন বৃহত্তম জ্বালানি তেলের কোম্পানি শেভরন করপোরেশনের।
এরপর থেকে ইরান বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে হুমকি অব্যাহত রেখেছে এবং তেহরানে একজন সুইস কূটনীতিককে ডেকে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ১৯৭৯ সালে মার্কিন দূতাবাস দখল ও জিম্মি সংকটের পর থেকে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ দেখাশোনা করছে সুইজারল্যান্ড।
জাতিসংঘে ইরানের মিশন তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
২০১৫ সালে বিশ্বশক্তির সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে ইরান আন্তর্জাতিক বাজারে খোলাখুলিভাবে তেল বিক্রি করার ক্ষমতা ফিরে পায়। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে চুক্তি থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেন এবং পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এরপর থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বাণিজ্য নিয়ে বিড়াল-ইঁদুর খেলা শুরু হয়।
এদিকে সম্প্রতি মার্কিন নৌবাহিনী মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমাগতভাবে উপস্থিতি বাড়িয়ে চলেছে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে যাচ্ছে সৈন্য ও বিমান বহনকারী জাহাজ। ইরানকে জাহাজ জব্দ থেকে বিরত রাখতে বাণিজ্যিক জাহাজে সশস্ত্র কর্মী রাখার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।
কমোডিটি ডেটা ফার্ম কেপলার অনুসারে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চলতি বছর ইরানের জ্বালানি তেল রফতানি বেশিরভাগই দিনে ১০ লাখ ব্যারেলের ওপরে হয়েছে। মে ও জুনে প্রতিদিন ১৫ লাখ ব্যারেলের ওপর ছিল। ইরানের জ্বালানি তেলের প্রধান ক্রেতা চীন। সম্ভবত বেইজিং উল্লেখযোগ্য ছাড়ে তেল কেনার সুযোগ পায়। সূত্র: ব্লুমবার্গ, এপি