ইরানের আগের নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে চায় ৩ দেশ

0
ইরানের আগের নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে চায় ৩ দেশ

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ফের বেড়ে যাওয়ায় জাতিসংঘের প্রধান নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করেছে তিন দেশ। দেশগুলো হলো যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তিন দেশের এই পদক্ষেপের ফলে কার্যকর হবে ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’।

এর মাধ্যমে আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনা হতে পারে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো এক চিঠিতে এই পদক্ষেপের কথা জানায় ই-থ্রি নামে পরিচিত এই তিন দেশ।

চিঠিতে বলা হয়, ইরান স্পষ্ট ও ইচ্ছাকৃতভাবে ২০১৫ সালের চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তারা অভিযোগ করে, ইরান সামরিক পর্যায়ের কাছাকাছি মাত্রায় বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ করছে, যার কোনো বেসামরিক যুক্তি নেই এবং এটি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠির জবাবে বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের কোনো আইনগত এখতিয়ার এই দেশগুলোর নেই। তিনি দাবি করেন, রাশিয়া ও চীনও ইরানের অবস্থানকে সমর্থন করছে। তেহরান আরো জানিয়েছে, পশ্চিমাদের এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে চলমান প্রক্রিয়াকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তারা একে ‘উসকানিমূলক ও অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা’ আখ্যা দিয়ে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানকে সতর্ক করেছিল—আগস্টের শেষ নাগাদ কূটনৈতিক সমাধানে রাজি না হলে নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনা হবে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি জানিয়েছেন, ইরান যদি নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করত তবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইরান এসব শর্ত পূরণে কোনো বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়নি।

ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ই-থ্রি-এর সঙ্গে কাজ করবে যাতে স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়। একইসঙ্গে ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতেও যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত—যাতে ইস্যুর একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তি করে ইরান। ওই চুক্তির আওতায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তিকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন এবং পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

এর জবাবে ইরান তার পারমাণবিক কার্যক্রম জোরদার করে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে চলছে কি না তা নিশ্চিত নয়। তবে ইরান জোর দিয়ে বলছে, তাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ বেসামরিক এবং তারা কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চায় না। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here