ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে ছিল যুক্তরাষ্ট্র

0

পাকিস্তানের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইসলামাবাদের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছিল। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রশ্নে ইমরান খান যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অবস্থান না নেয়ায় ওয়াশিংটন ক্ষুব্ধ হয়ে এই ব্যবস্থা নেয়।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য ইন্টারসেপ্ট’ গতকাল বুধবার পাকিস্তানের একটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক সূত্রের কাছ থেকে ইন্টারসেপ্ট একটি কূটনৈতিক বার্তা হাতে পেয়েছে যার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ইমরান খানকে সরিয়ে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা ২০২২ সালের ৭ মার্চ বৈঠক করেছিলেন।

বৈঠকে ডোনাল্ড লু প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের জন্য দোষারোপ করেন। এ সময় পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খান মার্কিন কর্মকর্তাদেরকে তাদের ভুল সংশোধনের চেষ্টা করে বলেন, ‘ইউক্রেন প্রশ্নে ইমরান খান একা নন বরং পুরো সরকার একই নীতি গ্রহণ করেছে।’

তখন ডোনাল্ড লু বলেন, ‘ইমরান খানের আচরণই সমস্যার কারণ। তবে যদি পাকিস্তানের সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট সফল হয় তাহলে ওয়াশিংটন সবকিছু ক্ষমা করবে। অন্যথায় আমি মনে করি পরিস্থিতি খারাপ হবে। ইমরান খানকে কোণঠাসা করার জন্য ইউরোপও আমেরিকাকে অনুসরণ করবে।’

বৈঠক সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খান যে কথা বলেছেন তাও উঠে এসেছে ওই কূটনৈতিক বার্তায়। তিনি বলেছিলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছিল এই হুমকি সরাসরি হোয়াইট হাউস থেকে এসেছে যার শক্ত কোনো জবাব দেয়া দরকার।’ এর এক সপ্তাহের মধ্যেই ইমরান খান এই কূটনৈতিক বার্তার কপি হাতে পান এবং তিনি সরাসরি বলেন, ‘তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য আমেরিকার চাপ সৃষ্টি করেছে।’

এপ্রিল মাসেই পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে অনাস্থা ভোটের আয়োজন করা হয় এবং তাতে চিরশত্রু মুসলিম লীগ ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি এক হয়ে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। শেষ পর্যন্ত ডোনাল্ড লু’র পরিকল্পনা অনুযায়ী আস্থা ভোটে ইমরান খানকে হারিয়ে দেয়া হয় এবং মুসলিম লীগ নেতা শাহবাজ শরীফকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়। তবে ইমরান খানকে পাকিস্তানের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার পর ইউক্রেন ইস্যুতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি রাতারাতি বদলে যায় এবং পাকিস্তান থেকে অস্ত্র তৈরির অনেক উপাদান কিয়েভে পাঠানো হয়। বিনিময়ে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্র যৌথ মহড়া, অভিযান পরিচালনা, প্রশিক্ষণ এবং সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে পুরস্কৃত করে।

সূত্র : পার্সটুডে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here