টানা ভারী বৃষ্টিতে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে। যার কারণে এখন পর্যন্ত অন্তত ৮৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৫৪৭ জন।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, এ দুর্যোগে আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার ৭০০ মানুষ। গত এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ঘরবাড়ি, সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ভূমিধস হওয়া অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। ওই এলাকাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি সহায়তা ও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধারকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা সুমাত্রার এ বিপর্যয়কর পরিস্থিতির পেছনের বিষয়ে ধারণা দিয়েছেন। যেখানে মারাত্মক ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার কারণ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছেন। তাদের মতে, ব্যাপকহারে বন উজাড় করায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কারণ, মাটি অতিরিক্ত পানি শোষণ করতে পারছে না, ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।
দেশটির গণমাধ্যম জাকার্তা পোস্ট জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ব্যাপকহারে বন উজাড়ের ঘটনা ঘটেছে। বছরটিতে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪০০ হেক্টর বনভূমি ধ্বংস করা হয়। যা বিগত বছরের তুলনায় ৫৪ হাজার ৩০০ হেক্টর বেশি।
বন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা নুসানতারা অ্যাটলাসের প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড গ্যাভোর মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সুমাত্রা দ্বীপে। অঞ্চলটিতে ২০০১ সাল থেকে ৪৪ লাখ হেক্টর বনভূমি ধ্বংস করা হয়েছে। যা সুইজারল্যান্ডের চেয়েও বড় এলাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়া সরকার জানিয়েছে, সুমাত্রার বন্যা কবলিত এলাকায় বন ধ্বংসের বিষয়ে কাজ চলছে। এর পেছনে অভিযুক্ত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার বনমন্ত্রী রাজা জুলি আন্তোনি বলেছেন, বন শাসননীতি পর্যালোচনা করা হবে। নতুন অনুমতি স্থগিত ও নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী বাহলিল লাহাদালিয়াও নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের অনুমতি বাতিল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

