বিজেপির সমর্থন নিয়ে বিহারে এনডিএ সরকার গঠন করল জনতা দল ইউনাইটেড’ (জেডিইউ) এবং সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন নীতিশ কুমার। সকালে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বিকেলে ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন এই নেতা। এই নিয়ে মোট ৯ বার তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন।
রবিবার আরও ৮ জন বিধায়ক মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এর মধ্যে বিজেপির তিনজন, জেডিইউ’র তিনজন, হিন্দুস্তানি আওয়ামী মোর্চার একজন এবং স্বতন্ত্র দলের একজন। উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন বিজেপির সম্রাট চৌধুরী এবং বিজয় সিনহা। রাজভবনে তাদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ আরলেখর। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জিতেন মাঝি প্রমুখ। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পরই তাদের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এর আগে এদিন সকালে দলের বিধায়কদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন নীতিশ কুমার। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করেন। পাশাপাশি রাজ্যটিতে এনডিএ সরকার গঠনের বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাবনা পাশ হয়।
আলাদা করে দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসে বিজেপিও। সেখানে বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত করা হয় সম্রাট চৌধুরীকে এবং উপনেতা করা হয় বিজয় সিনহাকে।
এরপর বিহারের মহাজোট সরকার থেকে ইস্তফা দেন নীতিশ কুমার। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে জল্পনা, টানাপোড়েন শেষে রবিবার সকালের দিকে বিহারের রাজ্যপালের হাতে নিজের ইস্তফা পত্র তুলে দেন নীতিশ। রাজ্যপাল সেই ইস্তফা পত্র গ্রহণও করেন।
গণমাধ্যমের কর্মীর সামনে নীতিশ জানান ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি ইস্তফা দিয়েছি। সেই সাথে বিহারে মহাজোট সরকার ভেঙে দেওয়ার জন্য আমি রাজ্যপালকে আবেদন জানিয়েছি। আরজেডি, কংগ্রেস এবং তিন বাম দলের সমন্বয়ে বিহারের মহাজোট ঠিকঠাক ছিল না। কয়েকদিন ধরেই আমার দলের নেতাকর্মী সহ সকলের কাছ থেকে মতামত ও পরামর্শ পাচ্ছিলাম। আমি তাদের সকলের কথা মন দিয়ে শুনে আজ পদত্যাগ করলাম। এবং সেই সাথেই বর্তমান সরকারের অবসান ঘটলো।’
বিহার বিধানসভায় মোট আসন ২৪৩ টি, ম্যাজিক ফিগার ১২২। এনডিএ জোটে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৮, জেডিইউ’এর ৪৫ জন, হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা-৪ এবং স্বতন্ত্র দলের ১ জন বিধায়ক রয়েছে।
রবিবার বিজেপির সমর্থনে নীতিশ কুমার সরকার গঠন করলেও আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভায় আস্থা ভোটে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিতে হবে জেডিইউ-বিজেপি জোট সরকারকে। যদিও আপাতদৃষ্টিতে এই সরকার পড়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, কারণ এনডিএ’এর সম্মিলিত আসন সংখ্যা ম্যাজিক ফিগার থেকে বেশি।
এদিকে মহাজোট সরকার ছেড়ে এনডিএ’তে যোগ দেওয়ার পরই বিহারে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে উৎসবের মেতে ওঠেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। ঢাক ঢোল বাজানোর পাশাপাশি চলে মিষ্টি মুখ।