ইউক্রেনের বাখমুত শহরের উপর রাশিয়া অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর এক ডেপুটি কমান্ডার রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি উপেক্ষা করেও রুশ বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। তার দাবি, প্রত্যেক মিটার দখল করার মূল্য হিসাবে কয়েক’শ রুশ সৈন্যকে প্রাণ দিতে হচ্ছে। শুধু বাখমুত নয়, পূবের পাঁচটি সেক্টরে রাশিয়া ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে ইউক্রেনের সামরিক সূত্রে জানানো হয়েছে।
ইউক্রেনের মতে, বাখমুত শহরের তেমন কৌশলগত গুরুত্ব না থাকা সত্ত্বেও রুশ বাহিনীকে যতটা সম্ভব কাহিল করতে প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে, ওয়াশিংটনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠকেও ইউক্রেনের জন্য সহায়তা নিয়ে আলোচনা হবে। মার্কিন প্রশাসন ৪০ কোটি ডলার মূল্যের নতুন সামরিক সহায়তার ঘোষণা করতে চলেছে। সেই প্যাকেজের আওতায় ইউক্রেন জিএমএলআরএস নামের রকেট সিস্টেম, হাইমার্স লঞ্চার, ব্র্যাডলি ফাইটিং ভেহিকেলের গোলাবারুদসহ আরও কিছু সরঞ্জাম দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার হামলা শুরু হবার পর থেকে ওয়াশিংটন কিয়েভকে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি মূল্যের সামরিক সহায়তা দিয়েছে।
বাইডেন ও শলৎস ইউক্রেন যুদ্ধে চীনের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করবেন। চীন রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দিতে পারে বলে যে আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্য পাল্টা পদক্ষেপের প্রস্তুতির রূপরেখা স্থির করতে পারেন দুই নেতা। বাইডেন প্রশাসন সহযোগী দেশগুলির সঙ্গে চীনের উপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছে। চীন অবশ্য এমন সহায়তার অভিযোগ অস্বীকার করছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শলৎস শেষবার ওয়াশিংটন সফরে এসেছিলেন। ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার প্রশ্নে বাইডেনের সঙ্গে সমন্বয় সত্ত্বেও ব্যাটেল ট্যাংকের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। তবে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য সত্ত্বেও শলৎস ও বাইডেন অদূর ভবিষ্যতে ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
শলৎসের মুখপাত্র স্টেফেন হেবেস্ট্রাইট জানিয়েছেন, দুই নেতা সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ইউক্রেনের জন্য সহায়তা চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। ভবিষ্যতে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তার গ্যারেন্টির বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন শলৎস। জার্মান সংসদে এক ভাষণে তিনি বলেন, সে বিষয়ে কিয়েভ ও অন্যান্য সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
মার্কিন প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালাইভ্যান এবিসি নেটওয়ার্ককে বলেছেন, ইউক্রেনের দুই প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ আমেরিকা ও জার্মানির মধ্যে ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহ নিয়ে উত্তেজনার উল্লেখ করেন। সালাইভান বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট অ্যাব্রামস ট্যাংক পাঠাতে রাজি না হওয়া পর্যন্ত জার্মানিও লেওপার্ড ট্যাংক পাঠাতে নারাজ ছিল। জার্মানি অবশ্য সালাইভানের বক্তব্য মানতে অস্বীকার করেছে। শুক্রবার শীর্ষ বৈঠকে বিষয়টির নিষ্পত্তির আশা করা হচ্ছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।