ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (ইইউ) প্রতিবেশী পাঁচ দেশে ইউক্রেনের শস্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আর বাড়াবে না বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশন। এমন সিদ্ধান্তের মাঝে শুক্রবার নিজস্ব বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি।
গত বছর রুশ আক্রমণের আগে বিশ্বের শীর্ষ শস্য রফতানিকারক দেশের একটি ছিল ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধের পর থেকে বৈশ্বিক বাজারে দেশটির কৃষি পণ্যের প্রবেশ কমে আসে। কৃষ্ণসাগরের পছন্দসই রুট ব্যবহার করতে না পারায় তখন থেকেই ইউক্রেনীয় কৃষকরা শস্য রফতানির জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর নির্ভর করছিল।
গত মে মাসে ওই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশগুলোতে রফতানি নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার প্রতিশ্রুতি দেয় ইউক্রেন। এরপর ইইউ শুক্রবার সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আর বাড়াবে না বলে ঘোষণা দেয়।
ইইউ বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস বলেন, ইউক্রেনীয় শস্য আমদানির বিরুদ্ধে একতরফা পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকা উচিত। কিন্তু পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি ইউক্রেনীয় শস্য আমদানিতে তাদের নিজস্ব বিধিনিষেধ পুনরায় আরোপ করে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা ইউক্রেনীয় পণ্যের ট্রানজিটের অনুমতি অব্যাহত রাখবে।
তবে ইউক্রেন রফতানি সীমাবদ্ধ করতে কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বা নতুন নিষেধাজ্ঞা কীভাবে উৎপাদিত পণ্যের প্রবাহকে প্রভাবিত করবে তা স্পষ্ট নয়।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ইইউ সদস্য দেশগুলোর অর্থনীতিতে যুদ্ধের প্রভাব স্পষ্ট করেছে। সঙ্গে জানিয়েছে দিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বিভাজন রয়েছে। বিশেষ করে যাদের শক্তিশালী কৃষি ব্যবস্থা তারা এককভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
এদিকে কিয়েভের শস্য রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আর বাড়ানোর ইইউর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সঙ্গে বলেন, ইইউ সদস্য দেশগুলো নিয়ম ভঙ্গ করলে ‘শোভনভাবে’ প্রতিক্রিয়া জানাবে সরকার।
অর্থনীতির স্বার্থে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে যুক্তি দিচ্ছে দেশগুলো। পোল্যান্ডের কৃষিমন্ত্রী রবার্ট তেলাস ফেসবুক পোস্টে জানান, ভুট্টা, গম ও কিছু পণ্যের বাজারে যাতে প্রভাব না ফেলে তাই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে মতানৈক্য সত্ত্বেও পোলিশ কৃষকের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে একটি সরকারি ডিক্রি অনুসারে শস্য, শাকসবজি, বেশ কয়েকটি মাংসের পণ্য ও মধুসহ ২৪টি ইউক্রেনীয় কৃষি পণ্যের ওপর জাতীয় আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে হাঙ্গেরি। স্লোভাকিয়ার কৃষিমন্ত্রী জানান, নিষেধাজ্ঞা শুধু অভ্যন্তরীণ আমদানিতে প্রযোজ্য। তবে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনীয় শস্যের ট্রানজিটকে প্রভাবিত করবে না বলে জানিয়েছে দেশ তিনটি। সূত্র: রয়টার্স