আল্টিমেটাম দিলেন আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া সেই প্রবাসীরা

0

প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ৫৭ প্রবাসী বাংলাদেশি। নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত দাবি করে এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা। 

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, জুলাই বিপ্লবে প্রবাসীরা হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে মিছিল করে এবং রেমিট্যান্স বন্ধের কর্মসূচি পালন করেন। মিছিলকে কেন্দ্র করে সে দেশে (আমিরাতে) অনেককে গ্রেফতার করা হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাজা দেওয়া হয়। এ ঘটনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ মিছিলের সাথে সম্পৃক্ত অথবা সম্পৃক্ত নয় কিন্তু স্বৈরাচারী সরকারের সমালোচনাকারী এ রকম অনেকের নামের তালিকা তৎকালীন অ্যাম্বাসেডরের মাধ্যমে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জমা দেয়।

তালিকার সূত্র ধরে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আমাদের কাউকে ফোন করে ডেকে নিয়ে আবার কাউকে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করে। এরপর দীর্ঘদিন তাদের হেফাজতে ও পরবর্তীতে জেলে রাখে। জেলে নেওয়ার পর উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ১০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আমরা কয়েকশ প্রবাসী মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসতে পেরেছি। এ জন্য আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে কৃতজ্ঞ

এ অবস্থায় দাবি আদায়ে ও সংকট নিরসনে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের দাবি জানিয়েছেন তারা। সংবাদ সম্মেলন থেকে নিজেদের কিছু দাবিও তুলে ধরেন তারা। তাদের দাবিগুলো হলো-

# আরব আমিরাতসহ ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। যারা বিদেশ যেতে চায়, সরকারি উদ্যোগে বিনা খরচে তাদের বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা। যাদের দেশে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আছে, যোগ্যতা অনুসারে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা। সেসব দেশে যারা ব্যবসায়ী ছিলেন এবং নতুন করে যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদের ব্যাংক বা যে কোনো সংস্থার মাধ্যমে বিনা সুদে প্রয়োজনীয় লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করা। যারা বয়স্ক তাদের বিভিন্ন প্রকার সরকারি ভাতার আওতায় নিয়ে আসা।

# সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ ফেরত প্রবাসীদের নো-এন্ট্রি দেওয়া হয়েছে। নো-এন্ট্রি তুলে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া।

# একই মামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখনও গ্রেফতার চলমান রয়েছে। কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে অতিদ্রুত গ্রেফতারি প্রক্রিয়া বন্ধ করা তথা মামলাটি শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া। এ ছাড়া এ মামলায় এখনও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগারে যেসব বাংলাদেশি প্রবাসী বন্দী আছেন তাদের অতি দ্রুত মুক্ত করে নিয়ে আসা।

# যারা আমাদের নামের তালিকা সেসব দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিয়েছিল জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করা।

# ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মতো একটি ট্রাস্ট গঠন করা, যাতে দেশের স্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত যে কোনো প্রবাসী একটি ক্ষতিপূরণ পেতে পারে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরের তালিকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থনের কারণে কারানির্যাতিত হয়ে দেশে আসা প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা।

# বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের মুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার লক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন ও সে অনুষ্ঠানের জন্য সম্মতি জ্ঞাপন ও আমন্ত্রণ পৌঁছানোর জন্য ৭ জনের প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি প্রদান করা। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here