আর যেন দেশে ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে: আলী রীয়াজ

0

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘মানুষ চায় যেন বারবার বাংলাদেশে এমন ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে, যেন আমরা এমন একটি রাষ্ট্র ও ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি, যেখানে সকলের সমান অধিকার থাকবে। দেশে যে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান শুধু মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভই প্রকাশ করেনি, এটি তাদের প্রত্যাশার প্রতিফলনও।’

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘যাতে করে বাংলাদেশে রাজনীতির ক্ষেত্রে আগামী দিনগুলোতে পথরেখা তৈরি করতে পারি, এ দায়িত্ব কেবল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয়, কমিশন কেবল সহযোগীর ভূমিকা পালন করছে। দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে অগ্রসর হতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল যেন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের পথে ভূমিকা পালন করতে পারে।’ 

তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগ এক অর্থে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করা, ধারণ করা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে আকাঙ্ক্ষার পূরণ ঘটেছে, তার সুনির্দিষ্ট রূপ দেওয়া। সেই আশায় আমাদের ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

তিনি বলেন, অনেকগুলো বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য আছে, পাশাপাশি ভিন্নমত আছে। সেটা অস্বাভাবিক নয়। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র গঠন ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থানে থাকবেন, আদর্শে থাকবেন, পরিকল্পনার কথা বলবেন। পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন একটি জাতীয় ঐক্যের। কারণ রাষ্ট্র পুনর্গঠন কেবল কোনো দলের বিষয় নয়, কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়, কোনো সংগঠনের বিষয় নয়, এটি জনগণের বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলো তার নেতৃত্বে আছে, সিভিল সোসাইটি তার অংশ হিসেবে আছে, অগ্রণী ভূমিকায় আছেন, নাগরিকেররা আছেন। আমরা আশা করি প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তার অবস্থানে থেকে জনগণের কাছে যাবে। কিছু কিছু বিষয়ে ছাড় দিয়ে সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমরা যেন অগ্রসর হতে পারি সে বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগ দেবেন। ‘ 

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা যেন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারি। সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে যেন সকলে মিলে ঐক্যের মাধ্যমে অগ্রসর হতে পারি। যে ঐক্যের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের শীর্ষ ব্যক্তি ও তার অনুসারীদের পলায়নে বাধ্য করেছ, তাতে অটুট থাকি।’

সংলাপটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here