আর্থিক খাতে জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় নির্দেশিকা জারি

0
আর্থিক খাতে জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় নির্দেশিকা জারি

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে আর্থিক খাতে উচ্চমাত্রার ঝুঁকি মোকাবিলায় ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা’ জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।

নির্দেশিকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে অন্যতম জলবায়ুু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে স্বীকৃত। দেশের আর্থিক খাত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সংবেদনশীল।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জলবায়ুুসম্পর্কিত ঝুঁকি ও সম্ভাবনার পদ্ধতিগত শনাক্তকরণ, মূল্যায়ন, ব্যবস্থাপনা এবং প্রকাশ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে  নতুন এই বিধান প্রণীত হয়েছে।

নির্দেশিকায় জলবায়ু হুমকির দুটি প্রধান ক্যাটাগরি চিহ্নিত করা হয়েছে- ভৌত ঝুঁকি এবং রূপান্তরজনিত ঝুঁকি। 

ভৌত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আকস্মিক দুর্যোগ, যেমন- বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব,  যেমন- তাপদাহ। আর রূপান্তরজনিত ঝুঁকি আসে নিম্ন-কার্বন অর্থনীতিতে রূপান্তরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিবর্তন থেকে, যার মধ্যে রয়েছে নীতিগত সংস্কার, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এবং কার্বন মূল্য বাস্তবায়ন।

এই জলবায়ু ঝুঁকিগুলো গুরুতর, যা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে, সম্পদের গুণগত মান ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, জামানতের মূল্য হ্রাস এবং ঋণ, বাজার, তারল্য ও পরিচালন ঝুঁকিসহ প্রচলিত মূল ঝুঁকিগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।

এসব চ্যালেঞ্জ গুরুতর হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক উল্লেখ করেছে, জলবায়ু পরিবর্তন একইসঙ্গে উল্লেখযোগ্য অর্থায়নের সুযোগও সৃষ্টি করে। এই সুযোগগুলো জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজন-কেন্দ্রিক উদ্যোগে কৌশলগতভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে কাজে লাগানো যেতে পারে, যা ভৌত ও রূপান্তরজনিত ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হবে।

নতুন এই নির্দেশিকাটি আর্থিক খাতে জলবায়ু-সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশের কার্যকর ও নির্বিঘ্ন বাস্তবায়নে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

এই নির্দেশিকায় আন্তর্জাতিক মান ও সেরা চর্চাগুলো এবং ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের  টেকসই ও জলবায়ুুসম্পর্কিত আর্থিক নির্দেশিকা’ সমন্বয় করে একত্রে জারি করা হয়েছে, যা বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত আইএসএসবি মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সার্কুলারে বর্ণিত প্রতিবেদন দাখিলের নিয়মাবলি অনুসরণ করতে হবে। সংযুক্ত টেমপ্লেট ব্যবহার করে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে, যা সার্কুলারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইন্যাবল ফাইন্যান্স বিভাগে অর্ধবার্ষিক ভিত্তিতে জমা দিতে হবে।

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা হলো পরবর্তী মাসের শেষ কর্মদিবস।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০২৩ পর্যন্ত সংশোধিত)ুএর ৪৫ ধারার এবং ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩ এর ৪১(২) ধারার ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here