হৃদি হকের বয়স কম। সাহস অনেক। এ সাহস সততা আর নিষ্ঠা থেকে পাওয়া। পাওয়া পারিবারিক শিক্ষা, থিয়েটার চর্চ্চা ও অনুশীলনের মাধ্যমে।
বাবা ড: ইনামুল হক ছিলেন অভিনেতা, নাট্যকার, শিক্ষক, সংগঠক এবং একজন নিরেট ভালো মানুষ। মা ও বিখ্যাতজন। লাকি ইনাম। গুণী অভিনয়শিল্পী, নির্দেশক ও সংগঠক।
সাংস্কৃতিক আবহে শিল্প ও সৌন্দর্যবোধের মধ্যে হৃদির বেড়ে ওঠা। তাই চিন্তা ভাবনা ও বিশ্বাসে তার বিশেষ হওয়ারই কথা।
বাবার ভাবনা আশ্রয় করে মেয়ে সম্প্রতি চলচ্চিত্র নির্মাণ শেষ করেছে। খুব বেশিদিন হয়নি বাবা গত হয়েছেন। তাঁর খুব সাধ ছিল, অভিনয়, নাট্য নির্দেশনার ক্ষেত্রে মেয়ের দক্ষতা দেখেছেন, চলচ্চিত্র নির্মাণে হৃদির সাধ্যের পরিমাণ কতখানি- দেখবেন।
দেখে যেতে পারেননি।
বাবার আশিতম জন্মদিবস খুব ভিন্নমাত্রায় উদযাপনের আয়োজন করেছিল মেয়ে। নিজের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্রের টিজার ও ট্রেইলার প্রকাশ করে পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন- এমন ভাবনা খুবই মধুর।
হৃদির আরও এক মধুর, সৃজনশীল ভাবনা সেদিন সবাইকে মুগ্ধ এবং আনন্দিত করেছে। একদা সিনেমা নির্মাণের পর দর্শকের সাথে সেই সিনেমার আবেগের সম্পর্ক তৈরি করে দিতো- সিনেমার ব্যানার। ব্যানার এখনও আছে- মানুষের হাতে আঁকা ব্যানারের যে রূপময়তা, আকর্ষণ, তা আর নেই।
সেই বিশেষ সৌন্দর্য হৃদি ফিরিয়ে আনার কথা ভেবেছে। হারিয়ে যাওয়া খ্যাতিমান ব্যানারশিল্পীকে খুঁজে বের করে, আঁকিয়েছে নিজের নির্মিত চলচ্চিত্রের ব্যানার। অনুষ্ঠান আঙিনায় সেদিন শিল্পী কলাকুশলী শুভানুধ্যায়ী ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সেটার উদ্বোধন করা হয়।
নিজের প্রথম সিনেমা সম্পর্কে জানান দিতে, সিনেমার প্রতি মানুষের হারিয়ে যাওয়া আবেগ অনুভব ফিরিয়ে আনার আগ্রহ যুক্ত করা- নিঃসন্দেহে সংবেদনশীলতাপূর্ণ, নিশ্চয়ই আলাদাভাবে মনোযোগ কেড়ে নেবার মতো ঘটনা।
সিনেমার নাম ১৯৭১, সেই সব দিন। মুক্তিযুদ্ধকালের গল্প। সেদিন দু একজনকে বলতে শুনেছি- এখন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ছবি দেখার জন্য দর্শকের আগ্রহ তেমন নেই।
খুবই বেদনাদায়ক উক্তি। এমন উক্তি, কথার পিঠে কথা আছে। বলবো, আর একদিন। বলতেই হবে।