আফগানিস্তানে এনজিওতে নারীকর্মী নিতে মানা, বাড়ির জানালা নিয়েও নির্দেশনা

0

আফগানিস্তানের তালেবান সরকার এবার দেশটিতে নারীদের নিয়োগ দেওয়া সব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওর কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। গত রবিবার প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দেশটিতে এনজিওগুলোর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণে এটি তালেবানের সর্বশেষ পদক্ষেপ। এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। খবর আল-জাজিরার।

আফগানিস্তান সরকার জানিয়েছে, কিছু এনজিও কর্মী সঠিকভাবে হিজাব পরিধান না করায় দুই বছর আগে দেওয়া এক নির্দেশনায় এনজিওগুলোকে নারী কর্মীদের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতায় নারীকর্মী নিয়োগের বিষয়ে তাদের সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দেশটির অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যক্রম নিবন্ধন, সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে। তালেবান নিয়ন্ত্রণাধীন নয় এমন সব প্রতিষ্ঠানে নারীদের কর্মসংস্থান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশ অমান্য করলে সেই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এবং লাইসেন্স উভয়ই বাতিল করা হবে।

তারা বলছে, গত দুই বছরে আফগান নারীদের সুযোগ-সুবিধা ব্যাপকভাবে সংকুচিত হয়েছে। জাতিসংঘের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেনসিয়া সোতো নিনো-মার্টিনেজ বলেছেন, এটি আমাদের জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা প্রদানে বড় বাধা তৈরি করবে। এখানে অর্ধেক জনসংখ্যার অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে, যারা ইতিমধ্যে দারিদ্র্য এবং মানবিক সংকটে ভুগছে।

এদিকে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, তালেবানের নৈতিকতা পুলিশ নারী ও পুরুষ উভয় মানবিক কর্মীর কাজ বাধাগ্রস্ত করছে। ত্রাণ কার্যক্রম চালানো সত্ত্বেও এই বাধাগুলো বাড়ছে। যদিও তালেবান দাবি করেছে, তারা এনজিওগুলোর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে না। তবে, তারা ইতিমধ্যে নারীদের বেশিরভাগ চাকরি, শিক্ষা এবং পাবলিক স্থানে উপস্থিতির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

এর আগে, আফগানিস্তানে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দেশটির আবাসিক ভবনগুলোতে জানালা নির্মাণের বিষয়ে নতুন আদেশ জারি করেন। আদেশে বলা হয়েছে, এমন স্থানে জানালা নির্মাণ করা যাবে না যেখান থেকে প্রতিবেশী বাড়ির ভেতরে দেখা যায়, বিশেষ করে যে স্থানে নারীরা থাকেন। একই সঙ্গে ইতোপূর্ব নির্মিত জানালাগুলোকেও স্থায়ীভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার রাতে তালেবান সরকারের প্রকাশিত একটি বিবৃতি বলা হয়েছে, ‘নতুন ভবনগুলোতে এমন জানালা থাকা উচিত নয় যার মাধ্যমে প্রতিবেশীর আঙ্গিনা, রান্নাঘর, কূপ এবং অন্যান্য স্থান দেখা যায়, যা সাধারণত নারীরা ব্যবহার করেন।’

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ তালেবার সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের পোস্ট করা ডিক্রিতে আরও বলা হয়, ‘রান্নাঘরে, উঠানে বা কুয়া থেকে পানি সংগ্রহ করতে নারীদের কাজ করতে দেখলে মনের ভেতরে অশ্লীল চিন্তা আসতে পারে। গোপনীয়তা সংরক্ষণ এবং সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে নারীদের রক্ষা করার লক্ষ্যেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here