মিরপুরে একমাত্র টেস্ট সিরিজে সফরকারী আফগানিস্তানকে ৬৬২ রানের রেকর্ড টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ফলে এই টেস্টে জয়ের জন্য আফগানিস্তানকে করতে হবে ৬৬২ রান।
এতে আফগানদের বিপক্ষে ২৬ মাস পর সেঞ্চুরির দেখা পান মুমিনুল, সর্বশেষ তার সেঞ্চুরি এসেছিল ২০২১ সালের এপ্রিলে পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
শুক্রবার ১ উইকেটে ১৩৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। গতকালের দুই অপরাজিত ব্যাটার উইকেটে এসে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলেছেন। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে পাত্তায়ই পায়নি আফগান বোলাররা।
সবালীল খেলতে থাকা দুই ব্যাটার বিপদ ডেকে আনলেন দৌড়ে ৩ রান নিতে গিয়ে। দুই রান সম্পন্ন করার পর দুটানায় পড়ে যান জাকির। আর তাতেই যেন সর্বনাশ! ৭১ রান করে জাকির সাজঘরে ফেরায় দিনের প্রথম সাফল্য পায় আফগানিস্তান।
জাকির ফিরলেও রানরেটে তার প্রভাব পড়েনি। কারণ অপর প্রান্তে থাকা শান্ত একই গতিতে রান তুলেছেন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের ভীত গড়ে দিয়েছিলেন তিনি। এবার দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাট হাতে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। প্রথম ইনিংসে ১১৮ বলে তিন অঙের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেছিলেন। আর এবার তিনি শতক পূরণ করেছেন ১১৫ বলে।
হাশমতউল্লাহ শাহিদির অফ স্টাম্পের ওপর করা ফুলার লেন্থের বল স্কোয়ার লেগে পাঠিয়ে প্রান্ত বদল করলেন শান্ত। অপর প্রান্তে পৌঁছানোর আগেই মাথার হেলমেট খুলতে থাকেন, প্রান্তে পৌঁছেই দুই হাত ওপরে তুলে শূন্যে লাফালেন! কারণ এই এক রান নিয়ে তিনি শতক পূরণ করেছেন। আর তাতে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়লেন শান্ত। এর আগে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এমনটা করে দেখিয়েছিলেন মুমিনুল হক।
২ উইকেটে ২৫৫ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না শান্ত। দুর্দান্ত এক ইনিংসের সমাপ্তি ঘটলো সাদা-মাটা একও ক্যাচে। ৫৪ তম ওভারের প্রথম বলটি পায়ের ওপর ফুল লেন্থে করেছিলেন জহির খান, সেখানে সোজা ব্যাটে খেলতে গিয়ে বল গ্রাউন্ডে রাখতে পারেননি শান্ত তাতে মিডউইকেটে ধরা পড়েন এই ব্যাটার। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৫১ বলে ১২৪ রান।
উইকেটে এসে দ্বিতীয় বলেই চার হাঁকান লিটন দাস। পঞ্চাশেও তিনি পৌঁছান বাউন্ডারি হাঁকিয়েই। মাঝখানে দুর্দান্ত সব শট খেলেছেন তিনি। সাবলীল ব্যাটিংয়ে করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। ৫৩ বলে ৮ চারে ১৬তম হাফ সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি। মুমিনুলের সঙ্গে তার জুটির একশও পূরণ হয় তাতে। মুমিনুলের ৪৯, লিটনের ৫৩ রান অবদান তাতে।
এই দুই মাইলফলকের কিছুক্ষণ পরই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুমিনুল। প্রায় ২৬ মাসের অপেক্ষা শেষ হয় তার। ড্রেসিং রুমের দিকে ব্যাট উঁচিয়ে ও লিটন দাসকে জড়িয়ে ধরে উদযাপন সারেন তিনি। ক্যারিয়ারের ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরি করেছেন মুমিনুল। দেশের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিও তার। মুমিনুলের আগে সেঞ্চুরি পান নাজমুল হোসেন শান্তও। একই টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় বাংলাদেশি তিনি।