মেডিকেল ভর্তিতে আসন সংখ্যা বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় ১০ হাজার জুনিয়র চিকিৎসক। কাজে ফেরার সরকারি নির্দেশের পরও যারা যোগ দেননি তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা শুরু করেছে সরকার।
সোমবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, সরকার মেডিকেল খাতের পেশাজীবীদের আন্দোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিতে পারে বা তাদের লাইসেন্স স্থগিত করতে পারে, এমনকি সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল ও জরিমানা করতে পারে।
সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজধানী সিউলে গতকাল রবিবার অনেক চিকিৎসক বিক্ষোভ করেছেন। এদের মধ্যে আন্দোলনে না থাকা অনেক চিকিৎসকও ছিলেন। তারা ‘আমরা অপরাধী নই’ লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন।
ভাইস স্বাস্থ্যমন্ত্রী পার্ক মিন-সু সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কাজে ফেরার সরকারি নির্দেশের পর মাত্র ৫৬৫ চিকিৎসক কাজে যোগ দিয়েছেন। এখনও প্রায় ৯ হাজার চিকিৎসক আন্দোলন করছেন।
‘আজ সোমবার থেকে সরকার আইনি ব্যবস্থা প্রয়োগ শুরু করছে’ বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘যদি তারা সরকারের কাজে ফেরার নির্দেশ লঙ্ঘন করেন তাহলে তিন মাসের জন্য লাইসেন্স স্থগিত করা হবে।
পার্ক মিন-সু সতর্ক করে বলেন, যারা বিশেষায়িত মেডিকেল সার্টিফিকেট পাওয়ার চেষ্টা করছেন তাদের সেটা পাওয়া এক বছর পর্যন্ত দেরি হয়ে যেতে পারে। এতে তাদের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃদ্ধ নাগরিকের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ও উন্নত দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় রোগীপ্রতি চিকিৎসকের সংখ্যা কম হওয়ায় সরকার মেডিকেলে ভর্তির আসন সংখ্যা বছরে তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার করতে চাইছে।
কিন্তু আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা বলছেন, এতে মেডিকেল শিক্ষার মানের অবনতি হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। নতুন চিকিৎসকেরা প্লাস্টিক সার্জারি ও ডার্মাটোলজির মতো অপ্রয়োজনীয় সেবায় ঝুঁকতে পারেন বলেও মনে করছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা।
তবে সমালোচকেরা বলছেন, আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা মূলত তাদের বেতন ও স্ট্যাটাস রক্ষায় বেশি আগ্রহী।
জরিপ বলছে, তিন-চতুর্থাংশ মানুষ চিকিৎসকদের আন্দোলনে বিরোধিতা করছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় এক লাখ ৪০ হাজার চিকিৎসক আছেন। সিনিয়র চিকিৎসকেরা আন্দোলন না করলেও তাদের অনেকে আন্দোলনে সমর্থনে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
সূত্র : আল-জাজিরা।