বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্যে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক বাণিজ্যে নিজস্ব মুদ্রা ‘রুপি’র ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে ভারত। এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রুপির প্রভাব বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি। এরই মধ্যে ১৮টি দেশের সঙ্গে রুপিতে লেনদেনের উদ্যোগ এগিয়েছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে।
বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ভারত। সম্প্রতি দেশটি নতুন অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, যেখানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিনিময় মুদ্রা হিসেবে রুপিকে ব্যবহারের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী প্রধান মেজবাউল হক মনে করেন এ উদ্যোগ উভয় দেশের জন্য লাভজনক।
তিনি বলেন, “আমরা মূলনীতির ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। বর্তমানে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। কার্যকর হতে কয়েক মাস সময়ের প্রয়োজন। কারণ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগে। অনুমোদন পাওয়া গেলে লেনদেনের ব্যয় কমে যাবে। ব্যবসায়ীরা আরও বেশি করে উৎসাহিত হবেন। ২০২১-২২ সালে ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য ছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার।”
অনুমোদন পাওয়া গেলে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো রুপি অ্যাকাউন্ট খুলবে ভারতীয় ব্যাংকের সঙ্গে। একই কাজ করবে ভারতীয় ব্যাংকগুলোও। অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা রুপির মাধ্যমে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা লেনদেন করতে পারবেন টাকায়। আসিয়ানের দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক মিত্র। ২০২১-২২ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছিল ১ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার। এভাবে ভারত ক্রমেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রুপির প্রভাব বাড়াতে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মতো ১৮টি দেশের সঙ্গে রুপি লেনদেনের অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে ব্রিটেন ও জার্মানির মতো উন্নত দেশও রয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে কিউবা ও তাজিকিস্তানের সঙ্গেও। রুপিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ভারতের আধিপত্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঝুঁকিও কম নেই। কারণ ভারত বর্তমানে বাণিজ্য ঘাটতি পার করছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ৫০০ কোটি ডলার বাণিজ্য ঘাটতি ছিল। রাশিয়ার সঙ্গে ২০২২-এর এপ্রিল থেকে ২০২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। সূত্র: দ্য স্ট্রেইটস টাইমস