ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে, যেখানে মামলার বাদী মো. নাজমুল হোসেন (২৬) এবং তার মা নাছিমা আক্তারকে (৫৬) আক্রমণ করে দুই আসামি। এই ঘটনা ঘটে আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে, যখন পিবিআই ঢাকা জেলা তদন্তের রিপোর্ট তথা চার্জশিট কোর্টে জমা দেয় এবং বিচারের জন্য সিজিএম কোর্টে বদলি করা হয়।
এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল হাসান (৩৪) এবং দ্বিতীয় আসামি শান্তা আক্তার (২৫) কোর্ট থেকে বের হওয়ার পর বাদী মো. নাজমুল হোসেন এবং তার মাকে আক্রমণ করে। তারা উক্ত আক্রমণের সময় বলেন, ‘তোদের সবাইকে মেরে ফেলবো, জেলতো খাটতেই হবে, তোদের মেরেই একসাথে জেল খাটবো।’ এরপর তারা বাদী এবং তার মাকে অনেক হেনস্থা করে এবং কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের আটকিয়ে রেখে গালিগালাজ করতে থাকে।
উল্লেখ্য যে, মামলাটি ৩০৬ ধারায় দায়ের করা হয়েছে, যা আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা। বাদীর বোন নিপা আক্তার ৭ মে ২০২৩ রাতে আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে পুলিশ জানতে পারে যে, প্রধান আসামি মাহমুদুল হাসান এবং দ্বিতীয় আসামি শান্তা আক্তার আত্মহত্যা প্ররোচনায় জড়িত। এই অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
বাদী মো. নাজমুল হোসেন ৮ মে ২০২৩ তারিখে সাভার মডেল থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেন (মামলা নম্বর ৩৩/০৫/২৩)। পুলিশ তদন্তের পর আসামি মাহমুদুল হাসানকে গ্রেফতার করে, তবে আসামি শান্তা আক্তারকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পরে তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করেন।
পরে সাভার মডেল থানা পুলিশ তদন্তের গাফলতির কারণে আসামি শান্তা আক্তারকে অব্যাহতি দেয়। এরপর, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পিবিআই ঢাকা জেলাকে পূর্ণ তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। পিবিআই ঢাকা জেলা নতুনভাবে তদন্ত চালিয়ে গত ১৩ জানুয়ারি নতুন চার্জশিট দাখিল করে, যেখানে আসামি মাহমুদুল হাসান এবং শান্তা আক্তার উভয়কেই অভিযুক্ত করা হয়।
আজ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকা জেলা এই চার্জশিট গ্রহণ করেন, যা মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এ ঘটনার পর, বাদী মো. নাজমুল হোসেন এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আসামিদের আক্রমণ এবং আদালতের বাইরে এমন ধরনের আচরণ সত্ত্বেও, বাদী এবং তার পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাদী এবং মামলার সাক্ষী নাছিমা আক্তার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা এখনো নিরাপদ বোধ করছি না। আসামিরা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েই যাচ্ছে। আমার এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তা দ্রুত নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানাই।’