আখাউড়ার টুপি যাচ্ছে বিদেশে

0

কেউ সেলাই করছেন, কেউবা ফুল তুলছেন, আবার কেউবা নিখুঁতভাবে পাথর বসানোর কাজ করছেন। যে যার মতো করে কাজে ব্যস্ত, এমন দৃশ্য দেখা যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের নুরপুর লামার বাড়ি গ্রামে। এখানকার তৈরিকৃত টুপি নিজ জেলার পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের প্রতিটি স্থানে সরবরাহ হয়। সেইসঙ্গে রফতানি করা হচ্ছে সৌদি আরব, পাকিস্তান, ইরাক, কাতার ও দুবাই।

১০ বছর আগে নুরপুর লামার বাড়িতে ভাড়ায় মো. শাহেদ আলী মুন্সি নামে এক উদ্যোক্তা বধুবরণ শাড়ি বিচিত্রা অ্যান্ড আলবাছির ক্যাফ প্রোডাক্ট নামে একটি কারখানা গড়ে তুলেন। এ কারখানায় পুরুষদের পাশাপাশি এলাকার অনেক নারী কাজ করছেন।

কারখানার মালিক মো. শাহেদ আলী মুন্সি বলেন, ছোট বেলা থেকেই তার একটা ইচ্ছা ছিল দেশের মাটিতে কোনো কিছু করার। সুই-সুতার কাজে কিছু একটা করার প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখতেন। গ্রামের সমবয়সীরা নানা কাজে চলে যাওয়ায় নিজে একটা কিছু করার আগ্রহ আরও বেড়ে যায় তার। এক পর্যায়ে টুপি ও শাড়িতে কাজ শিখতে ঢাকায় চলে যান। সেখান থেকে ফিরে ক্ষুদ্র পরিসরে লামার বাড়িতে প্রথমে টুপির কারখানা গড়ে তোলেন। এভাবে শুরু হয় তার ব্যবসা। বর্তমানে তার কারখানাতে ৯ জন পুরুষ ও ২৫ জন নারী কাজ করছেন। এই রমজানে টুপির চাহিদা কয়েকগুন বেড়েছে। শ্রমিকের অভাবে চাহিদা অনুযায়ী মালামাল দিতে পারছেন না বলে জানান। যাবতীয় খরচ বাদে প্রতি মাসে এই কারখানা থেকে ৬০ হাজার টাকার উপর তার আয় হয়।

সরেজমিন লামার বাড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই শ্রমিকরা টুপি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাছাড়া আশপাশের গ্রামের অনেক নারী বাড়িতে বসে কাজের ফাঁকে তারা টুপিতে পাথর বসানো ও হাতের কারুকাজসহ ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নারী শ্রমিক আরজু বেগম বলেন, তার স্বামী কৃষি কাজ করেন। স্বামীর সামান্য আয়ে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হওয়ায় তিনি টুপিতে পাথর বসানোর কাজ করছেন। প্রথমে কয়েকদিন কাজ করতে কষ্ট হয়েছে। এখন আর কোনো অসুবিধা হয় না। এ কাজ করে তিনি প্রতি মাসে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা আয় করছেন।

কারখানার শ্রকিম মো. জুয়েল নাঈমী বলেন, তিনি এই কারখানায় গত ৭ বছর ধরে কাজ করছেন। এই কাজে মাসিক কোনো বেতন নেই। কাজ অনুযায়ী বেতন হয়। এক ডজন টুপি তৈরি করলে ১০০ টাকা পাওয়া যায়। দৈনিক ৬০০ টাকার উপর তার আয় হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here