আখাউড়ায় ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা, গ্রেফতার ৩

0
আখাউড়ায় ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা, গ্রেফতার ৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সবজি বিক্রেতা মর্জিনা বেগম হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার আখাউড়া সড়কবাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

নিহত মর্জিনা বেগম (৪৫) পৌর এলাকার দেবগ্রাম গ্রামের ইসমাইল মিয়ার স্ত্রী। তিনি সড়কবাজারে পরিচ্ছন্নতার কাজ করতেন এবং সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি করতেন। তিনি তার দৃষ্টিহীন স্বামীর সঙ্গে নয়াবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগরের শহিদুল ইসলাম (৪৩), হবিগঞ্জের রানীগঞ্জের শফিক (৪০) এবং গয়েরপুরের রুমান মিয়া (২৪)। তারা আখাউড়া পৌর এলাকার মসজিদপাড়া লাল মিয়া হাজীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

পিবিআই জানায়, গত ২৫ নভেম্বর ভোররাতে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে ‘মালের গাড়ি এসেছে’ মর্মে মর্জিনা বেগমকে ডেকে নেওয়া হয়। পরদিন সকাল থেকে তার খোঁজ না পেয়ে পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। বিকেল পাঁচটার দিকে আখাউড়া পৌরসভা কার্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের পাশে তার মরদেহ পাওয়া যায়। গলায় চাপের দাগ ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

তদন্তে উঠে আসে, বাজার এলাকার দারোয়ান শহিদুল ইসলাম কৌশলে ফোন করে তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ফোন করার ১৪ মিনিটের মধ্যেই মর্জিনা বেগম সেই পথে ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছেন। শহিদুল ইসলাম প্রথমে তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর তার সহযোগী শফিক ও রুমান মিয়া ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী বাধা দিলে তিনজন মিলে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। একপর্যায়ে একজন গলা চেপে ধরে এবং অন্য দুইজন হাত–পা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা নিশ্চিত করে।

ঘটনার পর শহিদুল ইসলাম মোবাইল হারানোর নাটক করলেও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে তার ব্যবহার শনাক্ত হয়। পরে ২৬ নভেম্বর আখাউড়া সড়কবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার  দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে মসজিদপাড়া এলাকা থেকে শফিক ও রুমানকে গ্রেফতার করে পিবিআই।

গ্রেফতার তিনজনই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলমান।

পিবিআই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের সুপার শচীন চাকমা বলেন, ‘এটি একটি নৃশংস ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজের সহায়তায় আমরা দ্রুত আসামিদের শনাক্ত করতে পেরেছি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here