আকাশে উড়ল তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ৫ম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান

0

সফলভাবে আকাশে উড়েছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি তুরস্কের ৫ম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার কান।

বুধবার দেশটির রাজধানী আঙ্কারার মুর্টেড এয়ারফিল্ড থেকে অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমানটি উড্ডয়ন করে। পরে ১৩ মিনিটের উড্ডয়ন শেষে স্টিলথ ফাইটারটি সফলভাবে অবতরণ করে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার্কিশ অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিএআই) বুধবার রাজধানী আঙ্কারার মুর্টেড এয়ারফিল্ডে নিজেদের তৈরি ফাইটার জেট কান-এর ১৩ মিনিটের প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। তুর্কি সেনাবাহিনীর পুরোনো হয়ে যাওয়া বিমানবহরকে প্রতিস্থাপন করার লক্ষ্যে দেশীয়ভাবে প্রথমবারের মতো পঞ্চম প্রজন্মের এই ফাইটার জেট তৈরি করা হয়েছে।

প্রথমবার উড্ডয়নের আগে কান যুদ্ধবিমানের লঞ্চ সিট পরীক্ষা, পূর্ণ-দৈর্ঘ্যের স্ট্যাটিক পরীক্ষা, নিয়ন্ত্রণ পৃষ্ঠের স্ট্যাটিক পরীক্ষা, ল্যান্ডিং গিয়ার পরীক্ষা, অ্যাভিওনিক সিস্টেম পরীক্ষা, জ্বালানি পরীক্ষা, ইঞ্জিন স্টার্ট-আপ পরীক্ষা এবং ট্যাক্সি চালনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, দেশীয়ভাবে নিজস্ব পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার এয়ারক্রাফট তৈরির মাধ্যমে তুরস্ক আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পার করল।

তার্কিশ অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (টিএআই) প্রধান টেমেল কোটিল এক্সে বলেছেন, প্রথম উড্ডয়নে যুদ্ধবিমান কান ১৩ মিনিটের জন্য আকাশে ছিল। এই উড্ডয়নের সময় যুদ্ধবিমানটি ৮ হাজার ফুট উচ্চতায় ২৩০ নট গতিতে পৌঁছেছিল।

তুরস্কের ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজ প্রেসিডেন্সির প্রধান হালুক গোরগুন বলেছেন, তুরস্ক আরেকটি লক্ষ্য অর্জন করেছে যা দেশের প্রতিরক্ষা শিল্পের অন্যতম মাইলফলক হবে। তিনি বলেন, “কান-এর মাধ্যমে আমরা শুধুমাত্র পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার জেটই আনব না, এমন প্রযুক্তিও আনব যা বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে।”

জানা গেছে, নতুন প্রজন্মের অস্ত্রের সাথে কান যুদ্ধবিমান এয়ার-টু-এয়ার যুদ্ধে সক্ষম এবং সুপারসনিক গতিতে অভ্যন্তরীণ অস্ত্রভান্ডার থেকে নির্ভুল হামলা করতে সক্ষম। একইসঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং নিউরাল নেটওয়ার্ক সহায়তায় বর্ধিত যুদ্ধ শক্তিও পাবে ৫ম প্রজন্মের এই স্টিলথ ফাইটার।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, নতুন এই ফাইটার জেটটি প্রাথমিকভাবে দুটি জেনারেল ইলেকট্রিক এফ-১১০ ইঞ্জিন দিয়ে চলবে, এটি চতুর্থ প্রজন্মের লকহিড মার্টিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমানেও ব্যবহৃত হয়। তবে পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার হিসেবে তুস্কের এই যুদ্ধবিমানের স্টিলথ ক্ষমতা রয়েছে।

পরিকল্পনা ছিল, তার্কিশ ইঞ্জিন নিয়ে ২০২৮ সালে আকাশে উড়াল দেবে কান যুদ্ধবিমান। ২০১৬ সালে এই যুদ্ধবিমান তৈরির এ প্রজেক্ট শুরু হয়। তখন বলা হয়েছিল, ২০২৮ সালে তার্কিশ বিমান বাহিনীর কাছে প্রথম বিমানটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তার অনেক আগেই বিমানগুলো আকাশে উড্ডয়নের জন্য তৈরি হয়ে গেছে।

২১ মিটার (৬৯ ফুট) লম্বা যুদ্ধবিমানটি সর্বোচ্চ ২ হাজার ২২২ কিলোমিটার গতিতে উড়তে সক্ষম। এটিতে রয়েছে দুটি ইঞ্জিন। আর এ ইঞ্জিনগুলো বিমানটিকে আকাশে উড়াতে ২৯ হাজার পাউন্ড শক্তি সঞ্চার করতে পারে।

যুদ্ধবিমানটিতে রয়েছে উচ্চ সচেতনতা প্রযুক্তি, যুদ্ধের ক্ষতি শনাক্তকরণ প্রযুক্তি, অপটিমাইজড পাইলট ওয়ার্কলোড, নতুন প্রজন্মের মিশন সিস্টেম, কম পর্যবেক্ষণযোগ্যতা প্রযুক্তি, নির্ভুল আঘাত হানার সক্ষমতার প্রযুক্তি এবং অস্ত্র মজুদকরণ ব্যবস্থা। সূত্র: ব্লুমবার্গ, ডিফেন্স নিউজ, ডেইলি সাবাহ, রয়টার্স, আনাদোলু এজেন্সি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here