আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ভারতের জাতীয় হিসাব–পরিসংখ্যানে ‘সি গ্রেড’ দেওয়ার পর দেশটিতে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছিল, চলতি অর্থবছর ২০২৫–২৬-এর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৮.২ শতাংশে, যা গত বছরের ৫.৬ শতাংশের তুলনায় বেশি।
আইএমএফের সাম্প্রতিক ‘ইন্ডিয়া: ২০২৫ আর্টিকেল ফোর কনসালটেশন’ প্রতিবেদন বলছে, পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য না পাওয়ায় ভারতকে ‘সি গ্রেড’ দেওয়া হয়েছে। আইএমএফ মোট চারটি গ্রেড দেয়—এ, বি, সি ও ডি। এর মধ্যে ‘সি গ্রেড’ মানে হলো তথ্য কিছুটা অসম্পূর্ণ, যা মূল্যায়ন কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে।
ভারতের জিডিপি হিসাব নিয়ে বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক চরমে উঠেছে। বিজেপি বলছে, পরিসংখ্যানে কোনো ভুল নেই এবং দেশ দ্রুত এগোচ্ছে। তাদের দাবি, ভারত বর্তমানে ৭.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি। অন্যদিকে কংগ্রেস বলছে, আইএমএফের মূল্যায়নই প্রমাণ করে সরকারি পরিসংখ্যানে ত্রুটি আছে।
আইএমএফ জানিয়েছে, ভারত এখনও ২০১১–১২ সালের ভিত্তিবর্ষ ব্যবহার করে এবং উৎপাদক মূল্য সূচক (Producer Price Index) না নিয়ে পাইকারি মূল্য সূচক (Wholesale Price Index) ব্যবহার করে। এসবের কারণে প্রকৃত হিসাবের সঙ্গে পার্থক্য তৈরি হতে পারে। এছাড়া এনবিএফসি, পরিবার (Household) খাত এবং আর্থিক আন্তঃসংযোগ সম্পর্কিত তথ্যও অপর্যাপ্ত।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের জিডিপি পরিসংখ্যানে বহুদিন ধরেই প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে অসংগঠিত খাত যা অর্থনীতির বড় অংশ—নোটবন্দি, জিএসটি ও কোভিড–১৯ এর ধাক্কায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তবুও সরকারি তথ্য সেই বাস্তবতা দেখায় না। তাদের মতে, পদ্ধতিগত ত্রুটি দূর না করলে ভারতের অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান নিয়ে আন্তর্জাতিক আস্থা কমবে।

