দেশজুড়ে বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে পড়ে শেষমেশ পিছু হটতে বাধ্য হলো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার স্মার্টফোনে বাধ্যতামূলকভাবে সঞ্চার সাথী সাইবার সিকিউরিটি অ্যাপ প্রাক-ইনস্টল করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। এই আদেশের বিরুদ্ধে অ্যাপলের মতো প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর আইনি চ্যালেঞ্জের প্রস্তুতিও নিয়েছিল।
সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অ্যাপটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় (২৪ ঘণ্টায় ছয় লক্ষেরও বেশি এবং মোট ১.৪ কোটি ব্যবহারকারী) এই নির্দেশ তুলে নেওয়া হলো।
গতকালের মতো আজও যোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া সংসদ ভবনে জানান, এই অ্যাপটি নাগরিকদের সাইবার জগতে খারাপ শক্তিদের থেকে রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি একটি নিরাপদ অ্যাপ এবং ব্যবহারকারীরা যেকোনো সাধারণ অ্যাপের মতোই এটি ডিলিট বা মুছে দিতে পারবেন।
কিন্তু এই স্পষ্টীকরণ সত্ত্বেও বাধ্যতামূলক প্রাক-ইনস্টলেশন নির্দেশটি গোপনীয়তা লঙ্ঘনের আশঙ্কা তৈরি করেছিল। পেগাসাস স্পাইওয়্যার বিতর্কের মতো করেই অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন যে অ্যাপটি নজরদারির জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। গত দু’দিন ধরে ভারতজুড়ে বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিবাদের জেরেই শেষ পর্যন্ত এই আদেশ প্রত্যাহার করা হলো।
লোকসভায় মন্ত্রী সিন্ধিয়া আজ বলেছেন, সঞ্চার সাথী অ্যাপ দিয়ে আড়ি পাতা সম্ভব নয় এবং হবেও না। গণতন্ত্রে প্রত্যেক নাগরিকের যেমন অধিকার রয়েছে, আমিও অন্য যেকোনো অ্যাপের মতো এটি ডিলিট করতে পারি। আমরা সবার কাছে এই অ্যাপের সুবিধা পৌঁছে দিতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন, জনসাধারণের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে তাঁরা এই আদেশে পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত।
তবে সরকারের এই আদেশের তীব্র নিন্দা করেছে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এটিকে হাস্যকর বলে অভিহিত করে বলেন, সরকার এই দেশকে একনায়কতন্ত্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কার্তি চিদাম্বরম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশে এমনটি করা হয়েছে এবং সরকার এখন ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিওতে আড়ি পাততে চাইছে। শিবসেনার (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এই পদক্ষেপকে আরেকটি বিগ বস নজরদারি মুহূর্ত বলে সমালোচনা করেছেন।
সূত্র: এনডিটিভি

