তিন ফরম্য়াটে ভারত এখন বিশ্বের এক নম্বর দল। আর সেই কারণেই কি রাহুল দ্রাবিড়ের শিষ্যদের আত্মবিশ্বাস এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিল! একথা লিখতেই হচ্ছে কারণ অস্ট্রেলিয়াকে ঘরে ডেকে তুলোধোনা করে ছেড়ে দিল টিম ইন্ডিয়া। এক ম্য়াচ হাতে রেখেই তিন ম্য়াচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ জিতে নিল ভারত।
প্রথম ওয়ানডে ম্য়াচে মোহালিতে ভারত ৫ উইকেটে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। এবার ইন্দোরেও উড়ল জয়ের পতাকা। দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্য়াচে ভারত প্য়াট কামিন্সের ক্য়াঙারু বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করল ৯৯ রানে। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্য়াচে ভারত জিতল ডাক-ওয়ার্থ লুইস নিয়মে।
অজি বোলারদের ক্লাব স্তরে নামিয়ে আনার জন্যই এদিন ব্য়াট ধরেছিলেন শুভমন-শ্রেয়াস। ১৬৪ বলে ২০০ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করেন তারা। শুভমন করেন ৯৭ বলে ১০৪ রান (৬টি চার ও ৪টি ছয়)। শ্রেয়াসের ব্য়াট থেকে আসে ৯০ বলে ১০৫ রান (১১টি চার ৩টি ছয়)। বিশ্বকাপের আগে শ্রেয়াসের ব্য়াট ভারতীয় দলকে দিল বিরাট স্বস্তি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্য়াপ্টেন বুঝিয়ে দিলেন যে, আর চোট তার সমস্যা নয়, মিডল অর্ডারে আগুন জ্বালাতে তিনি প্রস্তুত। অন্য়দিকে গিলের চলতি বছর চলে এল হাফ ডজন একদিনের আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি।
শ্রেয়াস-শুভমন ফেরার পর, ভারতের তারকাখচিত ব্য়াটিং লাইনআপের বাকি তিন ব্য়াটারও ইন্দোর মাতিয়ে দিলেন। চারে নেমে রাহুল করলেন ৩২ বলে ৫৮ রান। তার ব্য়াটও এখন নিয়মিত কথা বলছে, পাঁচে নামা ঈশান কিশান করলেন ১৮ বলে ৩১ রান। এরপর ছয়ে নেমে সূর্যকুমার তাণ্ডব করলেন। ৩৭ বলে খেললেন অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংস! ব্য়াক-টু-ব্য়াক ম্য়াচে সূর্য করলেন হাফসেঞ্চুরি।
এই সূর্য কিন্তু নিজেই বলেছিলেন যে, তিনি কিছুতেই পঞ্চাশ ওভারের ফরম্য়াট ডি-কোড করতে পারছেন না, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বাদশা লাগাতার ব্য়র্থ হয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেটে। তবুও নির্বাচকরা তার উপরেই আস্থা রেখেছেন। সূর্য প্রমাণ করে দিচ্ছেন যে, বিশ্বকাপের আগে তিনিও যেন মিডল অর্ডার মাতাতে তৈরি আছেন। ব্য়াটারদের দাপটে ভারত নির্ধারিত ওভারে ৩৯৯ রান তোলে পাঁচ উইকেটের বিনিময়ে। অজিদের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিক ফরম্য়াটে এটাই ভারতের সবচেয়ে বড় রানের নজির।
এই বিরাট রান তাড়া করতে নেমে কামিন্সরা অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন। অস্ট্রেলিয়া শেষ হয়ে গেল ২১৭ রানে। এদিন অজিরা ব্য়াট করতে নেমে যখন ৫৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে, তখনই শুরু হয় বৃষ্টি। প্রায় ১১ ওভার নষ্ট হয় যার জন্য়। ম্য়াচ রেফারিরা সিদ্ধান্ত নেন যে, অজিদের জয়ের জন্য় ৩৩ ওভারে করতে হবে ৩১৭ রান। তবে দুই স্পিনার অশ্বিন-জাদেজার দাপটে অজি ব্য়াটাররা ধরাশায়ী হন।
অশ্বিন-জাদেজা দুইজনই তুলে নেন তিন উইকেট করে। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা নেন ২ উইকেট। এক উইকেট মোহম্মদ শামির। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে শুরুতে ডেভিড ওয়ার্নার ও শেষে অ্যাবট হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডে ম্য়াচ হবে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর)। ভারতের লক্ষ্যই থাকবে অজিদের হোয়াইটওয়াশ করে বিশ্বকাপ খেলতে নামা। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা ও হার্দিক পাণ্ডিয়াদের প্রথম দুই ম্য়াচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। তৃতীয় ওয়ানডে ম্য়াচে ফিরছেন তারা।